নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বন্দর প্রতিনিধি ) : হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান বন্দরের লাঙ্গলবন্দে শনিবার থেকে উৎসব মুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে দুই দিন ব্যাপী অষ্টমী স্নানোৎসব। হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ কর ; এ মন্ত্র উচ্চারণ করে পাপ মোচনের আশায় পূণ্যার্থীরা আদি ব্রহ্মপুত্র নদে স্নানে অংশ নিচ্ছেন।
স্নানের সময় ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা , হরিতকি, ডাব, আম পাতা ইত্যাদি পিতৃকুলের উদ্দেশ্যে নদের জলে তর্পণ করছেন তারা। শনিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে স্নানের লগ্ন শুরু হবে। স্নান উৎসব শেষ হবে আগামী রোববার সকাল ৭ টা ৫২ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। লগ্ন শুরুর পরপরই স্নানার্থীদের ঢল নামে ব্রহ্মপুত্র নদে। ১৮টি স্নানঘাটে দল বেধে, সপরিবারে কেউবা এককভাবে ধর্মীয় রীতি রেওয়াজ অনুযায়ী স্নানে অংশ নিচ্ছেন তারা।
এবার সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে স্নানোৎসব। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল থেকেও প্রচুর দর্শনার্থী লাঙ্গলবন্দ স্নানে অংশ নিয়েছেন বলে স্নান উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইতিমধ্যেই লাখ লাখ পূণ্যার্থীর আগমন ঘটছে। তাদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে লাঙ্গলবন্দ।
কুমিল্লার লাকসাম থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন সাহা (৫৫) জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করলে পাপ মোচন হয়, ব্রহ্মার কৃপা লাভ করা যায়। তাই তিনি প্রতি বছর স্নানোৎসবে অংশ নেন। এবার তিনি একা আসেননি। নদী পথে ট্রলার নিয়ে পাড়া প্রতিবেশীদের নিয়ে স্বপরিবারে লাঙ্গলবন্দে এসেছেন।
অষ্টমীস্নানকে কেন্দ্র করে নেয়া হয়েছে ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিন্টু বেপারী জানান, নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে তীর্থস্থান লাঙ্গলবন্দ। পুলিশ , র্যাব ও আনসারের দেড় সহস্রাধিক সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। বসানো হয়েছে ওয়াচ ট্ওায়ার ও নিরাপত্তা চেকপোস্ট।
এছাড়াও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে তীর্থস্থানের ৩ কিলোমিটার এলাকা। লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম, সাধু নাগ মহাশয় আশ্রম, ১ নং ঢাকেশ্বরী টিন লাইন ও বনগুন মিলন সংঘ, নিপসম, সেবা সংঘ, হিন্দু কল্যাণ পরিষদসহ অর্ধশত স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান দর্শনাথীদের খাবার সরবরাহ ও অন্যান্য সেবা প্রদান করছে।বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উদ্যোগে দেয়া হচ্ছে পূণ্যার্থীদের স্বাস্থ্য সেবা। এ দিকে স্নানোৎসব উপলক্ষে লাঙ্গলবন্দে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে লাঙ্গলবন্দ পূণ্যস্নান উদযাপন পরিষদ।