মেয়র আইভীকে এমপি সেলিম ওসমানের সমর্থন

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিনিধি ) : শহরে অবৈধ হকার উচ্ছেদ এবং ফুটপাতে পুনরায় তাদের বসতে না দেওয়ার জন্য মেয়রের সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এমপি সেলিম ওসমান। সিটি মেয়র আইভীর এই অনড় অবস্থানকে সঠিক এবং সাহসী উল্লেখ করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, ফুটপাত দখল মুক্ত রাখার পাশাপাশি নগরীতে অবৈধভাবে চলাচলকারী হাজারো অনুমোদন বিহীন রিকশার ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহনের অনুরোধ জানাচ্ছি। আর এসকল কাজ সুষ্ঠুভাবে সমাধানের ব্যাপারে সকলের সহযোগীতা কামনা করছি।

বৃহস্পতিবার ৪ জানুয়ারী দুপুর দেড়টায় বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় নব নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন পরিদর্শন শেষে ফুটপাতে অবৈধ হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে চলমান পরিস্থিতি এবং তাঁর অবস্থান সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এরপূর্বে সেলিম ওসমান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলীকে সাথে নিয়ে নতুন ভবনটি প্রতিটি ফ্লোর ঘুরে দেখেন। সেই সাথে ভবনের তৃতীয় তলায় প্রায় ৫ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার সাথে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় অংশ নেন তিনি।

ফুটপাত প্রসঙ্গে সেলিম ওসমান বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশ গুলোতেও ফুটপাতে হকার বসে। কিন্তু সেখানে সাধারণ জনগনের কোন প্রকার সমস্যার সৃষ্টি হয়না। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের ফুটপাতের হকাদের কর্মকান্ড রীতিমত সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালানোর মত হয়েছে। মাত্র কয়েক শত অবৈধ হকারের জন্য নগরীর লাখ লাখ মানুষের সমস্যা সৃষ্টি করা কোন ভাবেই মেনে নেওয়ার মত নয়।

নগরীর যানজট নিরসনে করনীয় বেশ কয়েকটি দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ফুটপাত দখল মুক্ত রাখার পাশাপাশি সেগুলোতে হাটাচলার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এক্ষেত্রে রাস্তার দুই পাশের ফুটপাতে গ্রিল নির্মান এবং বঙ্গবন্ধু সড়কের রাস্তার দুই পাশে যে ডিভাইডার রয়েছে সেগুলো সরানো যেতে পারে এতে কমপক্ষে ৫ ফুট রাস্তা বৃদ্ধি পাবে। নগরীতে যত্রতত্র যে সকল বেবী-টেম্পু ও অটো রিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড রয়েছে সেগুলো বন্ধ করতে হবে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ চলাচলকারী পাবলিক বাস গুলোকে সম্পূর্ন ওয়ান ওয়ে ভাবে চলাচলের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। শহরের প্রধান সড়কের উপর চাপ কমাতে সিটি করপোরেশনের থেকে ২নং রেলগেইট হয়ে চাষাঢ়া পর্যন্ত যে নতুন সংযোগ সড়ক করা হয়ে ছিল সেটি কয়েকজন ব্যক্তির কারণে আটকে রয়েছে ওই সকল ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করে রাস্তাটি চালু করা যেতে পারে।
এছাড়াও নব নির্মিত কমপ্লেক্সটি উদ্বোধন সহ ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি ধরে রাখতে নারায়ণগঞ্জের সকল মুক্তিযোদ্ধার ছবি সহ নাম, ঠিকানা, ৭১’র যুদ্ধক্ষেত্র, সেক্টর সহ যাবতীয় তথ্য সহ একটি বই প্রকাশের কথা বলেন। যেটি নতুন ভবনের উদ্বোধনের সাথেই মোড়ক উম্মোচনা করার আশা প্রকাশ করেন তিনি। নারায়ণগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা নাম বা সংগঠনের ব্যানারে যেখানেই যা হোক না কেন সেখানেই জেলার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার করার কথা উল্লেখ করেন তিনি। ইতোমধ্যে বন্দরে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সমরক্ষেত্র’৭১ মাঠের উন্নয়ন করা হয়েছে। যেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বেশ উন্নয়ণ করা হবে। পাশাপাশি সেখানে একটি মুক্তিযোদ্ধা অডিটরিয়াম নির্মাণের ঘোষণা দেন তিনি।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, সামিউল্লাহ মিলন, এম.এ সাত্তার, সদর উপজেলার কমান্ডার শাহজাহান ভূইয়া জুলহাস, চাষাঢ়া ইউনিয়নের কমান্ডার ফরিদা আক্তার, নুরু উদ্দিন মিয়া, নুরুল হুদা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, শহরে অবৈধভাবে দখলে রাখা ফুটপাত উচ্ছেদের প্রতিবাদে হকারদের আন্দোলনে নেই কোন সাড়া। তাদের আন্দোলনের মধ্যেই চলছে পুলিশ প্রসাশনের উচ্ছেদ অভিযান। গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া হকার উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত আছে। হকার ইস্যুতে একই ব্যানারে আন্দোলন করছে আওয়ামীলীগ, সিপিবি, বাসদ ও গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা। হকাররা ফুটপাতে পুনঃরায় বসতে চান। তবে হকারদের কোনরূপ ছাড় দিতে নারাজ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। জনগণের ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অনড় তাঁরা। এই নিয়ে শহর হয়ে উঠেছে উত্তপ্ত। এরআগে হকাররা জেলা প্রসাশক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার মঈনুল হক ও নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসনের এমপি শমীম ওসমান সহ মেয়র আইভীর সাথেও আলোচনা করেন। কিন্তু সমাধানের পথের দেখা এখনও মিলেনি।

add-content

আরও খবর

পঠিত