মুখস্থ বিদ্যা আর পাঠ্য বইয়ের বৃত্ত ভাঙ্গতে পারছে না শিক্ষার্থীরা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪: নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জের শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মকে পাঠ্য পুস্তকের বাইরে জ্ঞানার্জনের জন্য অনুপ্রানিত করা সহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহিত করে আসছেন। সেই লক্ষ্যে তাঁর নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নানা অনুষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নত্তোর, উপস্থিত বক্তৃতা, রচনা প্রতিযোগীতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ল্যাপটপ, মোবাইল, কম্পিউটার, গোল্ড মেডেল সহ নগদ অর্থ দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। সেই সাথে তিনি সকল শিক্ষার্থীর প্রতি আহবান রাখছেন, পুথিগত বিদ্যায় নয় প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। শুধু জিপিএ-৫ এর পেছনে ছুটলেই হবে না। তোমাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।

এমপি সেলিম ওসমানের এতোকিছুর পরেও নারায়ণগঞ্জের বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ আর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে গিয়ে সাধারণ জ্ঞান এবং দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য পাঠ্যপুস্তকের বাইরে যেন বের হতেই পারছেন না। বুধবার ২১ ফেব্রুয়ারী নারায়নগঞ্জ হাইস্কুল এন্ড কলেজের উদ্যোগে স্কুলের মাঠ প্রাঙ্গনে আয়োজিত মহান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এমন চিত্র আবারো ফুটে উঠেছে।

ওই দিন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান কোন বক্তব্য না রেখে প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ডেকে মঞ্চে তুলে নেন। সংসদ সদস্য তাদের কাছে ২১ ফেব্রুয়ারী সম্পর্কে প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান কেন এই দিনটিকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস বলা হয়ে থাকে। কত সালে ভাষা আন্দোলন হয়ে ছিল। ওই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়ে ছিলেন তাঁদের কয়েকজনের নাম কি। ঢাকায় কোন স্থানে মিছিলের উপর গুলি ছুড়া হয় এবং কত সালে ২১ ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সম্পর্কে ভাঙ্গা ভাঙ্গা বলতে পারলেও, বাংলাভাষা নিয়ে আন্দোলন পুঞ্জিভূত হওয়ার পেক্ষাপট, ভাষা আন্দোলনের সঠিক সময়(১৯৫২ সাল), গুলি ছুড়ার স্থান (ঢাকা মেডিকেল কলেজের সম্মুখে), শহীদ হওয়া ( সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর) , আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ইউনেস্কোর দেওয়া স্বীকৃতি (১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর) উত্তর গুলো শিক্ষার্থীরা দিতে পারেনি।

সব শেষে এমপি সেলিম ভাষা আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের ভূমিকা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরে একটি প্রশ্ন রাখেন। ওই প্রশ্নের সঠিক উত্তরদাতাকে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দেন। প্রশ্নটি ছিল ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় রাখায় ভাষা সৈনিক হিসেবে নারায়ণগঞ্জের একজন ব্যক্তি মরনোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন বলে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্ন রাখেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত শিক্ষার্থী সহ স্কুল প্রাঙ্গনে উপস্থিত কোন শিক্ষার্থীর তাঁর প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। তবে শুধু শিক্ষার্থীরাই নয় অনুষ্ঠান শেষে স্কুল পাঠে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সহ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও একে অপরের সাথে প্রশ্নটির উত্তর নিয়ে আলোচনা করতে শোনা গেছে। তাদের মধ্য থেকেও কেউ সঠিক উত্তরটি দিতে পারেননি।

অনুষ্ঠান সমাপ্তি ঘোষণার পূর্বে এমপি সেলিম ওসমান তার করা প্রশ্নের নিজেই উত্তর দিয়ে সবাইকে জানান ওই ভাষা সৈনিকের নাম খান সাহেব ওসমান আলী। যিনি এমপি সেলিম ওসমানের দাদা এবং স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুজ্জোহা এর বাবা।

এ সময় তিনি আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশু দিবস উপলক্ষ্যে আবারো নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন করার ঘোষণা দেন এবং সেই দিন প্রতিযোগীতার জন্য তিনি ১০লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা দিয়ে সবাইকে প্রস্তুতি গ্রহণের উপদেশ দেন।  এরআগে নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুলের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে গিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে রচনা, নৃত্য ও আবৃতির উপর প্রতিযোগীতা স্বর্ণ, রোপ্য ও ব্রোঞ্জ পদক পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে ছিলেন এমপি সেলিম ওসমান। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত প্রতিযোগীতা বিজয়ীদের মধ্যে জাকারিয়া ইসলাম লাবিব, ও রুদ্রজিৎ পোদ্দার অমিকে স্বর্ণপদক, অংকিতা সাহা ও চিন্ময় ভৌমিককে রোপ্য পদক , স্বরূপ সাহা ও সুনিবীর দত্তকে ব্রোঞ্জ পদক প্রদান করা হয়।

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি চন্দন শীলের সভাপতিতে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সহধর্মিনী মিসেস নাসরিন ওসমান।

add-content

আরও খবর

পঠিত