নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়নের খালগুলো। ক্ষমতাসীন দলের লোকজনদের ম্যানেজ করে অনেকেই খালের উপর নির্মাণ করেছেন বহুতল ভবন। কেউবা আবার খাল ভরাট করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও নির্মাণ করছেন। এদেরই একজন মুসকান মটর্স এর মালিক স্বপন। ভোলাইল শেষ মাথা এলাকায় রয়েছে তার জমি। সুযোগ বুঝে নিজের জমিতে স্থাপনা নির্মানের সময় সরকারী ২০ ফুট খালের ১৪ ফুটই দখল করে নিয়েছেন এই গুনধর। প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেই স্বপন তার স্থাপনা নির্মান করেছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। অপরদিকে খাল ভরাটের ব্যাপারে ইউনিয়ন ও ভূমি অফিসের তদরকি থাকার কথা থাকলেও তা কেউ করে না বলেও অভিযোগ ।
সরকারের পক্ষ থেকে খাল ভরাটের ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনাকে বৃদ্ধাংঙ্গুলী দেখিয়ে কাশিপুরের খালগুলো দখল করে যাচ্ছে একটি চক্র। আইনের তোয়াক্কা না করেই খাল সংলগ্ন জমির মালিকরা নিজের খেয়াল খুশি মতো খালের উপরই নির্মাণ করছে তাদের স্থাপনা। কাশিপুর এলাকার খালগুলো যে যার খেয়াল খুশি মতো ভরাট-দখল করে চলছে দিনের পর দিন। কেউ দলীয় প্রভাব আবার কেউ অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে খাল দখলের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। ভোলাইল শেষ মাথা এলাকায় ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কের পাশে স্বপন তার জমিতে একটি স্থাপনা নির্মাণ করেন। সুযোগ সন্ধানী স্বপন স্থানীয়দের সুবিধাবাদীদের ম্যানেজ করে সরকারী খালের বেশ কিছু অংশের উপর পিলার নির্মাণ করে, আর সেই পিলারের উপর নির্মাণ করেছে বহুতল ভবন। এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোলাইল শেষ মাথা এলাকায় একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এর পাশেই মুসকান মটর্স এর মালিক স্বপন গড়ে তুলেছেন তার স্থাপনা। খালের উপর আরো বেশ কয়েকজন বসত বাড়িও নির্মান করেছে। তবে স্বপন তার স্থাপনা করতে গিয়ে মূল খালের অর্ধেকেরও বেশি দখল করে নিয়েছে। ফলে পানি সরে যাওয়ার মূল যায়গাতে প্রতিবন্ধকতাও সৃষ্টি হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, স্বপন কারো কোন কথা শুনেনি। নিজের ইচ্ছা মতো সে সরকারী খাল দখল করেছে। নিজের ব্যবসা ঠিক রাখার জন্য সে খালের উপর পিলার করে স্থাপনার আয়তন বাড়িয়েছে। এলাকাবাসীর সমস্যার কথা চিন্তা না করেই সে এমন অন্যায় কাজটি করেছে।
এলাকাবাসী আরো বলেন, এক সময় দেশের বিভিন্ন স্থান হতে শীতলক্ষ্যা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত টানাবাজার, মন্ডলপাড়া, বাবুরাইল খাল দিয়ে কাশীপুরে মালবাহী বৃহৎ নৌযানের যাতায়াত ছিল ভোলাইল এলাকায়। বর্তমানে ছোট-বড় দোকান, সামাজিক সাংস্কৃতিক ক্লাবের নামে খাল দখল হয়ে গড়ে উঠেছে শতাধিক স্থাপনা। কিন্তু সবকিছু দেখেও যাদের দায়িত্ব খাল দখল মুক্ত করা,তারা নীরব ভূমিকা পালন করছে।
এব্যাপারে উপসচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) জসিম উদ্দিন হায়দার বলেন, খাল দখলের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। যারা খাল দখল করছে তাদের স্থাপনা উচ্ছেদসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ারও বিধান রয়েছে। খুব শীঘ্রই দখল হওয়া খালগুলো উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এব্যাপারে কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম সাইফুল্লাহ বাদল বলেন, খাল দখল করে স্থাপনা নির্মানের বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।