নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : স্বপ্ন নয়। এটা বাস্তব। অবশেষে স্বপ্ন হলো সত্যি, জুড়ে গেলো পদ্মার এপার–ওপার, দৃশ্যমান হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। বিজয়ের মাসে সংযুক্ত হলো প্রমত্তা পদ্মার দুই পাড়। আজ ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ৪১তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে বাস্তব রূপ পেলো পুরো পদ্মা সেতু। দুপুর ১২টা ২ মিনিটে সেতুর সর্বশেষ এই স্প্যানটি বসে। ২–এফ আইডির এই স্প্যান বসানোর পরই যুক্ত হলো মুন্সীগঞ্জ ও শরিয়তপুর জেলা। পদ্মা সেতুর পিয়ার–১২ ও পিয়ার–১৩ নম্বরে শেষ স্প্যানটি বসানো হয়। এর মধ্যে দিয়ে দৃশ্যমান হলো ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পুরো সেতু।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আব্দুল কাদের গণ্যমাধ্যমদের জানান, আজ সকাল ৯টা থেকে সর্বশেষ (৪১তম) স্প্যান বসানোর কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কুয়াশা থাকায় কাজ শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়। পরে দুপুর ১২টা ২ মিনিটের দিকে স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়।
নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, ৪০তম স্প্যান বসানোর ৬ দিনের মাথায় সেতুর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া অংশে মাঝ নদীতে ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে (পিলারের ওপরের প্ল্যাটফরম) ৪১তম স্প্যানটি বসানো হয়। এর আগে রাতে ভাসমান ক্রেনে করে স্প্যানটি নির্ধারিত পিয়ারের কাছে নেওয়া হয়।
এদিকে, স্প্যান বসানো ছাড়াও অন্যান্য কাজও এগিয়ে চলছে। এরমধ্যে সেতুতে ১৮ শতাধিক রেলওয়ে ও ১২ শতাধিক রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। ৪২টি পিয়ারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ হচ্ছে। সব কয়টি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
বহুমুখী এ সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতু। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যায়ে এই সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে।