নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিনিধি ) : নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলা ঘটনার অতিবাহিত হয়ে গেছে ২০টি বছর। প্রতি বছর ১৬ জুন এলেই চাষাড়ায় ঘটনাস্থলে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে জানানো হয় শ্রদ্ধা । এ বছরও ব্যাতিক্রমী কিছু নেই। বিচারের দাবীতে এখনো নিভৃতে কাঁদে নিহত ও আহতদের স্বজনরা। তবে ২০ বছরেও বিচার না পাওয়ায় এখনো মুক্তি মিলে নেই ২০ টি তাজা প্রাণের, এমনটাই মনে করেন নিহত-আহতদের পরিবার।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ওই দিনে নগরীর চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরেণের ঘটনায় দলের নেতা কর্মীসহ ২০ জন নিহত হন। আহত হন সংসদ-সদস্য শামীম ওসমানসহ শতাধিক নেতাকর্মী। ভয়াবহ এ বিস্ফোরণে প্রাণে বেঁচে যাওয়া আহতদের অনেকেই পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
খুব শিঘ্রই সম্পন্ন হবে এ ঘটনার বিচাকার্য এমন দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে পঙ্গুত্ববরণ করা মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সভাপতি বাবু চন্দনশীল বলেন, চারদলীয় ঐক্যজেটের ওই বিএনপি জামাত সরকার এবং খালেদা ও তার ছেলে তারেক রহমান এ ঘটনার ইন্ধন দিয়েছিলো।তারা সেদিন পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতা শামীম ওসমানকে টার্গেট করে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। তবে তাদরে সে ইচ্ছা পূরণ হয় না্ই। তারা এখনো আছে। আর এজন্যই এমন একটি বোমা হামলার ঘটনা বিচার বিলম্বিত হয়েছিল। কিন্ত এখন আর তা সম্ভব নয়। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যেহেতু জাতির পিতার হত্যার বিচার এ মাটিতে করেছে আমরাও বিচার পাবো।
এদিকে ২০ বছরেও নৃশংস ঘটনাটির বিচারকার্য শেষ না হওয়ায় স্বজনদের চোখের পানি শুকিয়ে গেলেও বুকে যেন রক্তক্ষরণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দলীয় নেতাকর্মীদের পক্ষে খোঁজ খবর না রাখারও রয়েছে আক্ষেপ। তারপরেও বেঁচে থাকতে দেখে যেতে চান খুনিদের বিচার।
নিহত স্বজনদের অনেকেই আবার নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, নৃশংস হামলায় মারা যাওয়ার পর থেকে এখন আর কউ খোঁজ নেয় না। শুধু নিজ উদ্যোগে দিনটি পালনে স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিতে এসে সান্তনা দেইেআমাদের আর কিছু চাইও না। শুধু বিচারটা দেখে যেতে চাই। আমাদের একটাই দাবী দ্রুত খুনিদের বিচার হোক।২০ টি তাজা প্রাণের রক্ত যেন বৃথা না যায়। বিচার হলেই তাদের আত্মা শন্তি পাবে।
এদিকে দিনটি পালনে সকাল থেকেই নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন, নিহত-আহত পরিবার, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা। তবে সকলের একটাই দাবী বিচারহীণতা থেকে মুক্তি হউক ২০টি তাজা প্রাণের।
সেদিন ওই ঘটনায়, নিহত হয়েছিলেন শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল হাসান বাপ্পী, সহোদর সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্রছাত্রী সংসদের জিএস আকতার হোসেন ও সংগীতশিল্পী মোশাররফ হোসেন মশু, সংগীতশিল্পী নজরুল ইসলাম বাচ্চু, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভাসানী, নারায়ণগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবিএম নজরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইদুর রহমান সবুজ মোল্লা, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী পলি বেগম, ছাত্রলীগ কর্মী স্বপন দাস, কবি শওকত হোসেন মোক্তার, পান–সিগারেট বিক্রেতা হালিমা বেগম, সিদ্ধিরগঞ্জ ওয়ার্ড মেম্বার রাজিয়া বেগম, যুবলীগকর্মী নিধু রাম বিশ্বাস, আবদুস সাত্তার, আবু হানিফ, এনায়েতউল্লাহ স্বপন, আবদুল আলীম, শুক্কুর আলী, স্বপন রায় ও অজ্ঞাত এক মহিলা।