বিএনপি নেতা ফ্রিডম মুসার বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতের জমি আত্মসাতের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (ভ্রাম্যমান সংবাদ দাতা) : পঞ্চায়েতের নামে জমি কেনার কথা বলে নিজ নামে জমি লিখে নিয়ে পঞ্চায়েত কার্যালয় বন্ধ করে দেবার অভিযোগ উঠেছে লালপুর- পৌষাপুকুর পাড় পঞ্চায়েত কমিটি ও মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদক, বিএনপি নেতা মোসলেম উদ্দিন মুসা ওরফে ফ্রিডম মুসার বিরুদ্বে।এ ঘটনায় স্থানীয়বাসীর মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়,গত এক দশক পূর্বে (২০০৯-২০১০ ইং সালে) হাজী আহসান উল্লাহকে সভাপতি ও মোসলেম উদ্দিন মুসা ওরফে ফ্রিডম মুসা কে সাধারণ সম্পাদক করে গড়ে তোলা হয় লালপুর- পৌষারপুকুর পাড় পঞ্চায়েত কমিটি।শুরুতে পঞ্চায়েতের জন্য একটি অফিস রুম ভাড়া নেওয়া হয়।পরবর্তীকালে পৌষারপুকুর পাড় এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়ী এবং কমিটির সকলের নিকট থেকে পঞ্চায়েতের জন্য জমি কেনার কথা বলে টাকা উত্তোলন করা হয়।কিন্তু উত্তোলনকৃত টাকা দিয়ে পঞ্চায়েতের জন্য নির্ধারিত জমি নিজ নামে দলিল করে নিয়ে নেয় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারন সম্পাদক ও পৌষারপুকুর পাড় জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা মোসলেম উদ্দিন মুসা ওরফে ফ্রিডম মুসা।

অপর একটি সূত্র জানায়,পঞ্চায়েতের জমি নিজ নামে লিখে নেবার পাশাপশি ফ্রিডম মুসা পঞ্চায়েতের অফিসে থাকা ২ টি টেবিল,২০ টি চেয়ার,টেলিভিশন, ও ফ্যান সহ পঞ্চায়েত কার্যালয়ে থাকা বিভিন্ন আাসবাবপত্র রাতের আধারে নিজ বাসায় নিয়ে যায় এবং পঞ্চায়েত কার্যালয়টি তালাবদ্ব করে দেয়।সূত্রটি জানায়, তালাবদ্ধ করার কারন জানতে চেয়ে বিষয়টি নিয়ে চাপাচাপি করায় প্রকাশ হয়ে পরে তার পঞ্চায়েতের জমি আত্মসাৎ করার মূল কাহিনী।

স্থানীয়রা জানায়, ফ্রিডম মুসার বিরুদ্বে মসজিদের নামে টাকা উত্তলোন করে তা আত্মসাৎ করা এমনকি মসজিদের জন্য তৈরী জানালার গ্রীল নিজ বাসায় লাগানো সহ নানা অসুধাপয় অবলম্বন করে অর্থ আত্নসাতের হাজারো অভিযোগ রয়েছে।

লালপুর পৌষপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সহ- সাধারণ সম্পাদক রুস্তম খন্দকার সাংবাদিকদের জানান, পঞ্চায়েতের কার্যালয়ের জন্য যে রুমটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিলো তা পঞ্চায়েতের জন্য ক্রয় করার জন্য পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বাড়ী বাড়ী থেকে টাকা উত্তোলন করা হয়।যা সাধারন সম্পাদক মুসার নিকট গচ্ছিত ছিলো।মুসা সেই টাকা দিয়ে পঞ্চায়েতের নামে জমি না কিনে উক্ত জমিটি নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নিয়েছে।প্রথম দিকে বিষয়টি গোপন থাকলে ও কার্যলয়টি বন্ধ রাখার কারন জানতে চেয়ে তা খোলার তাগিদ দিয়ে তালার চাবি চাইতে গেলে নানা টালাবাহানা করতে থাকে মুসা।এক পর্যায়ে মুসা নিজেই জানায় যে পঞ্চায়েতের কার্যালয়ের জায়গাটির সামনের আশি পয়েন্ট সে নিজ নামে রেজিস্ট্রেশন করে নিয়েছে।এবং কার্যালয়ের ভিতরে থাকা আসবাবপত্র সে নিজ বাসায় এনে রেখে দিয়েছে।এ নিয়ে সভাপতির সাথে বেশ কয়েকবার কথাকাটাকাটির পাশাপাশি উত্তোলনকৃত টাকার হিসেব নিয়ে ও কথা হয়।কিন্ত সভাপতি মৃত্যু বরন করলে বিষয়গুলো নিয়ে আর আলোচনা হয়ে উঠেনা।

সাম্প্রতিক সময়ে কমিটির অনেকেই বিষটি নিয়ে মুসার সাথে কথা বলতে চাইলে মুসা আবারো টালবাহানা শুরু করে।ফলে তারা কমিটির উপদেস্টা সহ স্থানীয় রাজনেতিক নেতাদেরকেও বিষয়টি অবগত করেছন।আর এতে করে মুসা নিজের অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। পঞ্চায়েত কমিটর সদস্য ও মসজিদ কমিটির অপর সহ- সাধারন সম্পাদক মোল্লা জাফর জানায়,ফ্রিডম মুসা এলাকার একজন চিন্থিত চাঁদাবাজ।মসজিদ কমিটির নাম ব্যবহার করে সে গত দেড় দশকে প্রায় দুই শতাধিক বাড়ীর গ্যাস লাইন সংযোগের সময় প্রতি লাইন সংযোগে দশ হাজার টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করেছে।এ নিয়ে পত্র পত্রিকায় একাধিক বার সংবাদ ও প্রকাশিত হয়।

তিনি আরো বলেন,মসজিদের জন্য তৈরী জানালার নতুন গ্রিল নিজ বাসায় লাগিয়ে বাসার পুরাতন গ্রিল মসজিদে লাগানো সহ মসজিদের ফান্ডের টাকাও সে আত্মসাৎ করেছে।যা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে কারোরই অজানা নয়। কবরস্থান কমিটির সভাপত হাজী গিয়াসউদ্দিন,ঔষধ ব্যবসায়ী মানিক ওরফে ডাক্তার মানিক, একই এলালার হাজী কাশেম,ফোন ফ্যাক্স ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন,সামছুল, স্থানীয় যুবক ইব্রাহিম হোসেন ইবু সহ আরো একাধিকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান মসজিদের টাকা ও পঞ্চায়েতের জমি আত্মসাৎ সহ ড্রেনের কথা বলে মুসা প্রতিটি বাসা বাড়ী থেকে চাদাঁ উত্তোলন করেছে ফ্রিডম মুসা। ফতুল্লা থানা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক বোরহান ব্যাপরী জানায়,ফতুল্লা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির ১ নং যুগ্ম- সাধারন সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন মুসার বিরুদ্বে পঞ্চায়েত কার্যালয় বন্ধ করা সহ মসজিদের টাকা আত্মসাৎ সহ নানা কু- কর্মের ঘটনা ইতিমধ্যে স্থানীয়বাসীর নিকট থেকে জেনেছি।

এ বিষয়ে তাকে একাধিকবার বলা হলে ও সে কারো কথায় কানে নেয়নি। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র মতে,বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও এক সময় সে ফ্রিডম পার্টির সক্রিয় ক্যাডার ছিলো।তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে ফতুল্লা থানায় তিনটি মামলা ( নং (২৮)তাং-১০/১০/ ২০১৮ইং,নং(৯৪) তাং২৬/৯/২০১৮ ইং,নং (২০) তাং ৭/২/২০১৮ ইং)রয়েছে। এছাড়া ফতুল্লা ডিআইটি মাঠে থাকা আওয়ামীলীগও অংঙ্গ সংগঠনের অফিস ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করার এজাহারনামীয় আসামী সহ ১৯৯৩ সালে নিহত যুবদল নেতা সমশের আলী খোকা হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ছিল ফ্রিডম মুসা।জেলা ফ্রিডম পার্টির দ্বায়িত্বে থাকা ফ্রিডম কামালের সার্বক্ষণিক বডিগার্ড ও সক্রিয় ক্যাডার হিসেবে তৎকালীন সময়ে দাবড়িয়ে বেড়িয়েছিলো জেলা শহর ও শহরতলীর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা।

উল্লেখ্য যে,সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ফ্রিডম মুসা সরকার দলীয় আওয়ামীলীগে যোগদান করার চেষ্টা করলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা- কর্মীরা মুসার আওয়ামীলগ বিরোধী অতিত কর্মকান্ডের কথা স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে জানিয়ে যোগদানের বিষয়টি নিয়ে বিরোধিতা করলে আওয়ামিলীগে যোগদানের বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়। মোসলেম উদ্দিন মুসা ওরফে ফ্রিডম মুসা লালপুর পৌষপুকুরপাড় এলাকার মৃত জয়নাল ওরফ কাঠুরিয়া জয়নালের পুত্র ও জাল দলীল তৈরীর প্রতারক চক্রের হোতা চিন্থিত ভূমিদস্যু আইয়ুব ওরফে রেডিও চোর আইয়ুবের ছোট ভাই বলে জানা যায়।

add-content

আরও খবর

পঠিত