নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (নিজস্ব প্রতিনিধি) : নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া সহ আশেপাশের বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত ও বিভিন্ন স্কুল, কলেজের সামনে জমে উঠেছে মানহীন অসাস্থকর খাদ্যের রকমারী বাহার। পথের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যে সাধারন পথচারী থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরাও দিন দিন নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় পেট ব্যাথা ও মাথা ব্যাথা দেখা দিলেও পরবর্তীতে ধাপে ধাপে তা ভয়ংকর মৃত্যুতে অবস্থান ঘটায়। শহরের পথে ঘাটে, স্কুল, কলেজ গুলোতে পথের সামনে দাড়িয়ে হকারদের বিক্রিত খাবার গুলো অস্বাস্থ্যকর, নোংরা পরিবেশ, মানহীন অবস্থায় রাখায় ব্যকটেরিয়া যুক্ত খাবারের সৃষ্টি হয়।
পথের ধারে খোলা অবস্থায় দাড়িয়ে বিক্রিত হচ্ছে ১-৩ দিন আগে তৈরীকৃত ফোসকা, বেল পুরি, চিকেন ফ্রাই, টিক্কা, কাবাব, বারগার, সেন্ডুইচ, সমুচা, সিংগারা, আলুর চপ, পুরি, পিয়াজু, নুডুলস, জালমুড়িসহ হরেক রকমের খাবার। যা তৈরী করা হচ্ছে ভেজাল তৈল ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে। এসকল খাবারগুলোতে যেমন কোন খাদ্যমান নেই, তেমনি খাবারের জন্য অনোপযোগী।
বিশেষজ্ঞরা জানান, পথে খাবার বিক্রির জন্য কোন নিতিমালা নেই। ফলে হকাররা অবৈধভাবে ফুটপাতে বা বিভিন্ন পথে-ঘাটে মানহীন ও অসাস্থকর খাবার বিক্রি করেই যাচ্ছে। যেখানে খাবারগুলো ঢেকে রাখার জন্যও কোন সচেতনতাবোধ হকারদের মধ্যে দেখা যায়না। এ ব্যপারে বিভিন্ন চিকিৎসকগণ তাদের মত ব্যক্ত করেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পথে বসা হকারদের বিক্রয় করা খাবার খেয়ে পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা, ডায়রিয়া, আমাশয়, বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ কৃমি হওয়া, যকৃতের সমস্যা, ক্ষুদামন্দা, জন্ডিস ও হেপাটাইটিস-এ রোগে আক্রান্ত হয়।
বহুদিন যাবত এ ধরনের খাবারের ফলে শিশুদের অপুষ্টি ও যকৃতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য পরামর্শকরা শিশুদেরকে বাহিরের অসাস্থকর খাদ্য না দিয়ে সচেতন অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়া উচিত। একই সঙ্গে বাচ্চাদের স্বাদ রুচিকে প্রাধান্য দিয়ে তা অনুশীলন করে তা ঘরে বানানো ফাস্টফুড, চটপটি, ফুচকা ইত্যাদি খাবার তৈরী করে বাচ্চাদেরকে ঘরমুখি খাবারের প্রতি আকৃষ্ট করা একান্তই প্রয়োজন বলে জানান।
পথের খাবার বিক্রির নীতিমালা তৈরীর জন্য ক্যাব ২০০৮ সালে জনসাস্থ ইনস্টিটিউটের সঙ্গে একটি রুপরেখা তৈরী করলেও এ ব্যপারে এখন পর্যন্ত কোন আইন করা হয়নি। তবে এসকল খাবারগুলিই যদি মানসমপন্ন ও সাস্থকরভাবে পরিবেশনে হকাররা গ্লাস এর ব্যবহার করে। এবং খাবার তৈরী ও বিক্রিতে নিরভেজাল প্রক্রিয়ায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করে, এতে করে অন্তত সাধারণ মানুষ অনেকটাই বিভিন্ন রোগের আক্রামন থেকে ঝুকিঁমুক্ত হবে।
এ প্রসঙ্গে জেলা সিভিল সার্জন ডা: এহসানুল হক বলেন, ফুটপাতে বিক্রিত এসব অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পেটের পীড়া দেখা দেয়। কিন্তু এসব খাদ্য থেকে বিরত থাকাই ভালো। তবে প্রতিটা জেলা উপজেলা ও সদরে মাঠ র্পযায়ে আমাদের হেলথ ইন্সপেকশন রয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য শিক্ষা র্কাযক্রম করা হচ্ছে। যেখানে খাদ্য কিভাবে গ্রহন করতে হবে, খাদ্যের মান কেমন হবে। এটা নিয়ে সাবধান করা হয়। যা একটি চলমান প্রক্রিয়া। যা ধীরে ধীরে নিরসন করা সম্ভব হবে। কিন্তু এরজন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। আর ২০১৩ সালে খাদ্য নিরাপত্তা আইনের কিছু অ্যাক্ট রয়েছে। এটা জেলা প্রশাসক ও আমরা কিছু বিষয়ে অবগত রয়েছি। তবে এ ব্যাপারে ফুড সেফটি অথোরেটি রয়েছে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বাস্তবায়ন করবো।
প্রসঙ্গত, ভাম্যমান আদালত ফুটপাতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ভেজাল খাবারের বিভিন্ন দোকান ও রেস্তেরায় জরিমানা করে থাকেন। কিন্তু ফুটপাতে উচ্ছেদ অভিযান চলালেও অভিনব কায়দায় পূনরায় স্থাপন করে তাদের বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জনস্বাার্থে নারায়নগঞ্জ এর ভ্রাম্যমান আদালত ও সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের এ ব্যপারে আরো বিশেষ নজরদারী সকল সচেতন সর্বসাধারনের কাম্য।