নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নারী শ্রমিকদের উপর জ্বীনের আছরের ঘটনায় গার্মেন্টসে অশান্ত জ্বীন এর আতংক সৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে । ৩১ অক্টোবর বুধবার বিকালে ফতুল্লার কুতুবআইল এলাকার কাঠের পুলস্থ মেট্রো নিটিংয়ে ৬ নারী শ্রমিকের উপর জ্বীনের আছর করলে ৬জন নারী শ্রমিক আহত হয়ে পড়ে।
ঐ সময় আহত ৫জন নারী শ্রমিককে নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে যান আর গুরুতর আহত বিলকিস খানপুর হানপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা যায়। বড় ধরনের দূর্ঘটনা এড়াতে গার্মেন্ট মালিকপক্ষ জ্বীনের হাত থেকে বাচাতে গত ৪ জুলাই ৫টি গরু জবাই করেছিল। কিন্তু না গরু জবাই দেয়ার ৩ মাস পরেও শ্রমিকদের উপর জ্বীন শ্রমিকদের উপর আছর ছাড়েনি।
জানা যায়, মেট্রো নিটিংয়ের সুইং অপারেটার নারী শ্রমিক বিলকিস বেগম বুধবার সন্ধ্যায় ৭ম তলার টয়লেটে গিয়েছিল। সে টয়লেটে প্রবেশ করার পর, হঠাৎ করেই দরজার বাইরের লকটি নিজ থেকেই থেকে উপরে উঠে যায়। এসময় বিলকিস দরজা খোলার চেষ্টা করে। দরজা না খোলার কারনে বিলকিস বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করে। তার চিৎকারে ৫ জন নারী শ্রমিক টয়লেট থেকে বিলকিসকে উদ্ধার করতে যায়। এসময় বাকি ৫জন শ্রমিকও আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তাদের চিৎকারে মালিক পক্ষের লোকজন ৬ নারীকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। গুরুতর আহত বিলকিসকে খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এমনটিই জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা। এসময় পুরো প্রতিষ্ঠানে জ্বীন আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনার সময় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ এ ঘটনায় কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে এটি কি জ্বীন আতংক নাকি অন্য কিছু এনিয়েও এলাকায় আতংক সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে, মালিক পক্ষ তাৎক্ষণিক ভাবে গার্মেন্ট ছুটি ঘোষণা করেন। তাছাড়া শ্রমিকদের দাবি, এর আগে গার্মেন্টসটিতে এমন ঘটনা ঘটেছিলো বলে জানা যায়।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মেট্রো নিটিং প্রতিষ্ঠানটিতে অনেক আগে থেকেই জ্বীনের উপদ্রব রয়েছে । প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বেশ কয়েকজন শ্রমিকরা বলেছেন, প্রায় সময় শ্রমিকদের উপর জ্বীনের আছর হয় বলে জানান । চলতি বছরের গত ২ ও ৩ জুলাই বেশ কয়েকজন শ্রমিকের উপর জ্বীনের আছর পড়েছেন বলে জানা যায়।
এছাড়াও ২ দিনে কোনো কারণ ছাড়াই ৭ জন নারী শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে কারো মুখ থেকে লালা পড়তে দেখা যায়। আবার কেউ কেউ জ্ঞান হারিয়ে মেঝেতে পড়েছিলেন। তা ছাড়া কাউকে আবার হাত-পা শক্ত করে পড়ে থাকতেও দেখা গেছে ! এরপর তাদের উদ্ধার করতে গেলে তারা শুরু করেন অস্বাভাবিক আচরণ। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলতে থাকেন, ৫টি গরু ও দে, নয়তো বড় ধরনের ক্ষতি হবে।
বড় ধরনের দূর্ঘটনা এড়াতে গার্মেন্ট মালিকপক্ষ জ্বীনের হাত থেকে বাচাতে গত ৪ জুলাই ৫টি গরু জবাই করা হয়েছিল। এবং মিলাদ ও দোয়া শেষে শ্রমিকদের এরপর খিচুরি ও গরুর মাংস রান্না করে খাওয়ানো হয়েছে।