নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখে তার জবাব পেল দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সৈয়দা রওনক জাহান সেঁজুতি। সোনারগাঁয়ের মোগরা পাড়া গ্রামে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে সে। বাবার নাম সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। মোগরাপাড়া এইজিজিএস স্মৃতি বিদ্যায়তনের সহকারী শিক্ষক তিনি। কিছুদিন আগে ছোট্ট সেঁজুতির দাদু মারা যায়। দাদুকে হারিয়ে ভীষণ মন খারাপ তার। অবশ্য সেঁজুতি তার হারানো দাদীকে খুঁজে পায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাঝে। তাই মনের কথা খুলে বলতে সেঁজুতি গত মাসের ২৫ তারিখ প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি লিখে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখে তার জবাবও পেয়েছে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সৈয়দা রওনক জাহান সেঁজুতি। শুধু জবাবই নয়, ছোট্ট সেঁজুতির প্রত্যাশা পূরণ করতে নিজের একটি ছবিও তাকে পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেঁজুতি নারায়নগঞ্জে প্রমিস চাইল্ড অ্যাকাডেমির দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। সেঁজুতি তার দাদুকে ভুলতে পারেনা। টিভিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখে তার মনে পড়ে তার দাদুর কথা। তার মনে হয় প্রধানমন্ত্রীর চেহারার সঙ্গে তার দাদুর চেহারার অনেক মিল। বিশেষ করে নাক। তাই আবেগ সংবরন করতে না পেরে গত মাসের ২৫ তারিখ চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রীকে। ছোট্ট হাতের সেই আঁকাবাঁকা চিঠিতে সে প্রধানমন্ত্রীকে তার বাড়ীতে আমন্ত্রন জানায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেঁজুতির চিঠি পাওয়ার পর তার জবাবও দেন চলতি মাসের ১২ তারিখ। সেঁজুতি ও প্রধানমন্ত্রীর চিঠিটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের লোগো সংবলিত নিজস্ব প্যাডে কম্পোজ করা সেই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী সেঁজুতিকে ভাল করে পড়তে বলেন। সেঁজুতির দাদুকে যেন আল্লাহ বেহেশত নসীব করেন সেই কামনাও করেন তিনি।
উত্তরে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, তোমার লেখা চিঠি পেয়েছি। আমার স্নেহ ও শুভেচ্ছা গ্রহণ কর। আশা করি তুমি বাবা-মা, বন্ধুদের নিয়ে খুব ভালো আছো। তোমার চিঠিটি আমি কয়েকবার পড়েছি। তোমার দাদুর জন্য দোয়া করেছি। তোমার দাদুকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন বেহেশত নসিব করুন। তুমি মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করবে এবং স্কুলে যাবে। বাবা-মার কথা শুনবে এবং বড় হয়ে দেশের সেবা করবে। তোমার জন্য আমার একটা ছবি পাঠালাম। অনেক অনেক দোয়া আর আদর রইল।
চিঠিটি পড়ার সময় মনে হয় যেনো কোনো আপন দাদী নাতিনের চিঠি বিনিময় হচ্ছে। গ্রাম বাংলার যৌথ পরিবারগুলোতে যে ভালবাসা লুকায়িত তা পাওয়া যায় এই চিঠিতে। চিঠি দুটির সত্যতা প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং সূত্রেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পেয়ে আনন্দে আত্মহারা সেঁজুতির পরিবার। সেঁজুতির বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠির জবাব পেয়ে আমার মেয়ে সেঁজুতি খুব খুশি। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সেঁজুতি প্রধানমন্ত্র¿ীর পাঠানো ছবি হাতে নিয়ে বসে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর চিঠিসহ সেঁজুতির ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে সারাদিন অনেক ফোন এসেছে। অনেকে সেঁজুতির সঙ্গে কথা বলেছেন, তাকে দোয়া করেছেন।
সেঁজুতির মা বলেন, প্রধানমন্ত্রী এতো ব্যস্ততার মধ্যেও আমার ছোট্ট একটা মেয়ের চিঠি উপেক্ষা করতে পারেননি, এটাই আশ্চর্যের। আসলেই তার মানবতা অনেক উঁচু পর্যায়ের।
গতকাল সকালে সেঁজুতি জানায়, প্রধানমন্ত্রী চিঠিতে যেসব উপদেশ দিয়েছেন, আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো। নিয়মিত স্কুলে যাবো, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবো। বাবা মায়ের কথা শুনবো। আমি পড়াশোনা করে অনেক বড় হয়ে শেখ হাসিনার মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চাই। দেশের মানুষের সেবা করতে চাই।