নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : প্রথমে মানুষের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তুলে স্বাবলম্বী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এরপর ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিতেন স্বামী-স্ত্রী। তারপর প্রতারণার জাল বিস্তার করতে থাকেন।
এসব যে তাদের প্রতারণা, তা সাধারণ মানুষের বুঝতে সময় লাগত। কিন্তু যখন সাদা স্ট্যাম্প আর চেকের পাতায় স্বাক্ষর করে নিতেন, তখনই ভুক্তভোগী বুঝতে পারতেন স্বপ্ন দেখানো মানুষটি আসলে একজন ভয়ংকর প্রতারক। এমনই একজন নারী প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) লিপি আক্তার নামের প্রতারক নারীকে আটক করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তার গ্রেফতারের খবরে এ সময় প্রতারণার শিকার বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী আদালতে ভিড় করেন।
ভুক্তভোগী কহিনুর বেগম জানান, ফতুল্লার মুসলিমনগর এলাকায় তিনি বসবাস করেন। পার্শ্ববর্তী মরা খালপাড় এলাকায় লিপি আক্তার প্রথমে তাকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতার স্বপ্ন দেখান। এজন্য ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা করে দেবেন বলেও তাকে প্রলোভন দেখিয়েছিলেন। লোন পেতে লিপি তার কাছ থেকে খালি চেকের পাতা ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন।
এ সময় ঋণ পাসের জন্য নগদ টাকাও তার কাছ থেকে নেন প্রতারক লিপি আক্তার। আর এরপরই তার আসল রূপ বেরিয়ে আসে। ঋণের টাকা তো দূরের কথা উল্টো তার কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত চাইলে, তাকে মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকি দেয় লিপি ও তার স্বামী জামান।
অপর দিকে, কহিনুরের জামিনদারের দেওয়া চেকের পাতায় কৌশলে ১৩ লাখ টাকার অঙ্ক বসিয়ে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন প্রতারক দম্পতি।
প্রতারক লিপির গ্রেফতারের সংবাদে রবিবার দুপুরে আদালত পাড়ায় এসে জড়ো হয়েছিলেন ভুক্তভোগীরা। তারাও লিপির বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা করেছেন। অভিযুক্ত লিপি আক্তার ফতুল্লার কাশিপুরের মরা খালপাড়া এলাকার আহম্মেদ জামান খানের স্ত্রী। জামানও তার স্ত্রীর প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করতেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জের অফিসার মো. মিজানুর রহমান মুন্সি জানান, লিপি ও তার স্বামী সহজ সরল মানুষদের টার্গেট করত। এরপর তাদের পরিবারের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তুলত। মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে খালি চেক তাদের নামে লিখেও নিতেন। পরে মামলার হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত জামান-লিপি দম্পতি।