নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : কচ্ছপের গতিতে এগোচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক)-এর বঙ্গবন্ধু সড়কে গভীর ড্রেন নির্মাণ প্রকল্প। প্রকল্প শুরুর ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো অর্ধেক কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নগরবাসী। এর মধ্যে বর্ষার জলাবদ্ধতা যুক্ত হয়ে ভোগান্তিকে আরও তীব্র করেছে।
শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও উন্নত সুয়ারেজ ব্যবস্থার লক্ষ্যে নাসিকের ১৩ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের চাষাঢ়া থেকে নিতাইগঞ্জ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়কের দুই পাশে আরসিসি গভীর ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রকল্পের অর্থায়ন করছে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। ৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে একটি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ২৬ জুন, অপরটির ২০২৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি।
তবে নির্ধারিত সময় প্রায় শেষ হয়ে এলেও এখনো ৫০ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের দৃশ্যমান কাজ শুরু হয় গত বছরের নভেম্বরে, কালিরবাজার মোড় থেকে পশ্চিম পাশে খনন কাজ দিয়ে। এরপর থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় খোড়া ড্রেনের মাটি, ইট, বালু, সিমেন্ট দিনরাত ফেলে রাখা হয় মূল সড়কে, ফলে যান চলাচলে তৈরি হয় বাধা। সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, স্বল্পসংখ্যক শ্রমিক দিয়ে ধীরগতিতে কাজ করায় এক একটি জায়গায় মাসের পর মাস খোঁড়াখুঁড়ি চলেছে। খোড়া জায়গাগুলো অরক্ষিত থাকায় প্রায়ই পথচারীরা গর্তে পড়ে আহত হচ্ছেন।
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চলতি মে মাসজুড়ে বর্ষার বৃষ্টি। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুর থেকে শুরু হওয়া টানা ও ভারী বৃষ্টিতে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায় পুরো শহর। ড্রেন নির্মাণ চলায় বৃষ্টির পানি ঠিকভাবে অপসারণ না হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে জলাবদ্ধতা থাকে রাস্তায়।
ভোগান্তির কথা জানিয়ে সিএনজি চালক আব্দুল হান্নান বলেন, “অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমে। গাড়ি চালাতে পারি না, যাত্রীও পাই না। ইঞ্জিনে বারবার পানি ঢুকলে নষ্ট হয়ে যায়। ইঞ্জিন নষ্ট মানেই বিশাল খরচ।”
আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে পথচারী মো. রশিদ বলেন, সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। বর্ষার আগে ড্রেনের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এখানে বর্ষার সময়েই ড্রেন খোঁড়া হয়। প্রশাসনের কি কোনো পরিকল্পনা নেই? আমাদের এই দুর্ভোগ প্রাকৃতিক না, প্রশাসনের সৃষ্টি।
নগরবাসী মনে করছেন, প্রকল্পের পরিকল্পনায় ঘাটতি ও নজরদারির অভাবেই এই দুর্দশার সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত কাজ শেষ করে রাস্তাঘাট সচল করার দাবি জানান।