নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে বিএনপির যারা আশাবাদী

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) নির্বাচন এরই ধারাবাহিকতায় ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে ২৭টি ওয়ার্ডে ১ জন মেয়র, ৯ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ২৭ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হবে। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সব কিছুর পরও শেষ বেলায় ভোটারদের হাতেই জয় বিজয়ের সিদ্ধান্ত নিধারিত হবে।

এবারের নাসিক নির্বাচনকে বিএনপি বয়কট করলেও দল থেকে মেয়র পদে স্বতন্ত্র ১ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে একাধিক ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছে প্রায় আড়াইডজন নেতা। তবে বিএনপির রাজনীতি করা এ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার পর থেকে দলের নীতি নিধারকরা তার বিরুদ্ধে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যদিও তিনি দলীয় প্রতিক নিয়ে নির্বাচন না করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটের লড়াইয়ে অংশ গ্রহন করেছেন। তবুও যেন মরার উপর খারার ঘাঁ হয়ে তার উপর একের পর এক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি। তবে এসব নিয়ে এ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই, আর সেদিকে তিনি নজরও দিচ্ছেন না।

অপরদিকে, প্রায় আড়াইডজন নেতা কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলেও কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতাদের তাদের নিয়ে তেমন কোন বিধি নিষেধ নেই। কারন স্থানীয় রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে হলে তৃণমূলকে শক্ত অবস্থানে থাকাটা খুবই জরুরী।

এবারের নির্বাচনে বিএনপির আড়াইডজননের বেশি নেতা কাউন্সিলর পদে ভোটের লড়াইয়ে অংশ গ্রহন করলেও আলোচনায় রয়েছেন হাতে গুনা কয়েকজন। তাদের মধ্যে মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউছার আশা, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক সাগর প্রধান, যুবদল নেতা মহসিন উল্লাহ, যুবদল নেতা দিদার খন্দকার, মহানগর বিএনপি নেতা হান্নান সরকার ও সুলতান আহমেদ।

এদিকে, নির্বাচনে নাসিক ২৩ নং ওয়ার্ডে জনসমর্থন, প্রচার প্রচারনা ও ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে আবুল কাউছার আশাকে নিয়ে খোলামেলা কথা বলছেন ভোটাররা। তাদের দাবি, আবুল কাউছার আশা সাবেক সাংসদ মরহুম জালাল হাজ¦ীর নাতি। তার বাবাও ৩ বারের সাবেক সাংসদ এ্যাড. আবুল কালাম যিনি নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিত্বে ক্লিন ইমেজের অধিকারী। এই পরিবারটি সব সময় আমাদের পাশে থেকে সেবা করেছেন সব সময়। এখনও এই সেবার ধারা অব্যাহত রেখে চলেছেন বিভিন্ন মাধ্যমে।

তারা আরও বলেন, গত ৫ বছরে আমাদের এই ওয়ার্ডটি মাদকের গ্রাসে চলে গেছে প্রতি নিয়তই যুব সমাজ মাদক আশক্ত হয়ে পরছে। বর্তমান এই পরিস্থিতি থেকে আমাদের ভবিষ্যত্ব প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে জালাল হাজ¦ীর পরিবারকে জনপ্রতিনিধি করতে হবে। তাই আমাদের এক কথা ২৩নং ওয়ার্ডে কাউছারের বিকল্প কেউ নাই।

অপরদিকে, নাসিক ৮নং ওয়ার্ডেও প্রায় একই অবস্থা বিরাজমান। ভোটাররা বলেন, বিগত করোনা কালিন লকডাউনে সাগর প্রধান জনপ্রতিনিধি না হয়েও যেভাবে দিন রাত পরিশ্রম করে আমাদের সহযোগীতা করেছে, সেটা ভাষায় প্রকাশ করে শেষ করা যাবে না। সাগর প্রধান ব্যক্তিগত উদ্যোগে শীতবস্ত্র, খাদ্য সামগ্রী, পুষ্টিকর খাবার বিতরন করে অসহায় মানুষকে সেবা দিয়েছেন। সেই সাথে করোনা কালিন লকডাউনের সময় মাঠে থেকে আমাদের সহযোগীতার হাত বারিযে দিয়েছেন তা কখনই শোধ হবার নয়। তাই সাগর প্রধানকে নিয়ে আমাদের রয়েছে ভবিষ্যত্ব ভাবনা।

এবারের নাসিক নির্বাচনে ১১নং ওযার্ডে মহসিন উল্লাহ প্রথম বারের মত নির্বাচনে অংশগ্রহন করলেও জনসেবার কারনে রয়েছেন বেশ আলোচনায়। তিনি সুখে দু:খে সব সময় এলাকাবাসীর পাশে থেকেছেন র্নিধিদায়। তিনি প্রার্থী হিসেবে নতুন হলেও এলাকাবাসীর জনসমর্থন ও ভালবাসা পেযে হয়েছেন সিক্ত। এ বিষয় তিনি বলেছেন, আমাকে যারা ভালবাসে তারা ১৬ তারিখ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জানান দিবেন আর ফয়সালার মালিক আল্লাহ।

এদিকে, দিদার খন্দকার যিনি যুবদলের রাজনীতির সাথে জরিত থাকলেও ক্ষমতাশীনদের সাথে রয়েছে দহরম-মহরম সর্ম্পক। সেই সর্ম্পকের সূত্রকে কাজে লাগাতে না পারলেও ভোটারদের কাছে ব্যক্তি ইমেজই তাকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে যথেষ্ট। এছাড়াও আওয়ামী লীগের ৩ জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে অংশ গ্রহন করায় হতে পারে দিদার খন্দকারের জয়ের মালা সময়ের অপেক্ষায় মাত্র।

এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন হান্নান সরকার যিনি একাধিকবার ২১ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন নিষ্ঠার সাথে। তাকে নিয়ে ভোটারদের কাছে কিছু বললেই ক্ষিপ্ত হওয়ার বিষয়ও প্রকাশ হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। তাকে ছাড়া এই ওয়ার্ডে অন্য কাউকে ভাবছেন না বলেই চলে। তার রয়েছে জন সমর্থনের মত বিশাল পাওয়া। তাকে নিয়েও ভোটাররা স্বপ্ন দেখছেন আগামী দিনের।

অপরদিকে, নাসিক ২০ নং ওয়ার্ডে রয়েছেন সুলতান আহমেদ যিনি কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন ভোটারদের। প্রচার প্রচারনার দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকলেও তার রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক। তার দায়িত্বশীলতার কারনেই তাকে নিয়ে এবারো ভাবছেন ভোটাররা।

তাছাড়া এদিকে আলোচনা ও সমালোচনা দুই নিয়েই এবারের নাসিক নির্বাচনে ভোট যুদ্ধে অংশ গ্রহন করা প্রতিটি প্রার্থীই অপেক্ষার প্রহর গুনছেন ভোটারদের সিদ্ধান্তের। তবে সব কিছুর পরও ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের পর নাসিক ২৭টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব নিতে ১ জন মেয়র, ৯ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ২৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থীদের তালিকায় কারা থাকছেন। তা দেখতে আগামী ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

add-content

আরও খবর

পঠিত