নারায়ণগঞ্জে হকার নেতা আসাদ সহ ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪  : নারায়ণগঞ্জে হকারদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার হকার নেতা আসাদুল ইসলাম, কালু গাজী ও মানিক দেওয়ান সহ আরো ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় পুলিশের উপ পরিদর্শক  (এসআই) নুরুজ্জামান বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ১০ই মার্চ বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

এতে আসামিদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, হত্যার উদ্দেশ্যে পুলিশের ওপর হামলা ও আঘাত, সড়ক অবরোধ করে যানজট সৃষ্ টিসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে। ঘটনার সময় তিনজনকে লাঠিসোটা ও ইটসহ আটক করা হয়েছিল। মামরায় এই তিনজনের কাছ থেকে ৫টি বাঁশের লাঠি, ২১টি ইটের টুকরো, ১১টি কাঠের ডাসা, ২টি লোহার রড উদ্ধার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে মামলায় অভিযোগ করা হয়, মঙ্গলবারের ঘটনায় বাদী এসআই নুরুজ্জামান সহ ওসি শাহ জামান, এসআই মো. রুবেল, এএসআই শিশির আহম্মেদ হামলাকারীদের আঘাতে জখম প্রাপ্ত হয়েছে।

উল্লেখ্য, ৯ই মার্চ বিকাল ৫টা হতে সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাতে বসার দাবিতে আন্দোলনরত হকারদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ওই সময় হকার নেতা আসাদকে আটক করলে বিক্ষুব্ধ হকাররা নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক, সলিমুল্লাহ সড়ক ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের বিভিন্ন স্পটে অবস্থান নিয়ে সড়কে আগুন ধরিয়ে দেন। বেশ কয়েকটি বাস গাড়ি ভাঙচুর করে।  হকারদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় হকার পুলিশ সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন বলে দাবি করে পুলিশ। বিপরীতে হকারদের দাবি, পুলিশের লাঠিচার্জে তাদের নেতা আসাদুজ্জামানসহ অন্তত আরও ১৫ জন আহত হন।

এদিকে বুধবার বেলা ১১টায় হকার নেতা আসাদের মুক্তির দাবি ও ‘পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ চলবে না’ এই দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা হকার্স সংগ্রাম পরিষদ চাষাঢ়া শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। সেখানে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা কমরেড আবু হাসান টিপু।

বিক্ষোভ সমাবেশটি সঞ্চলনায় ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটিরসহ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন এম. এ শাহীন, আবুল হোসেন, আইয়ুব আলী, নাছির হোসেনসহ অন্য নেতৃবৃন্দ ও হকারবৃন্দ। তবে সকাল থেকে পুলিশকে কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গেছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সাজোয়া যান থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিল পুলিশ। সমাবেশ স্থলের মাইকও খুলে নিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা। পরে মাইক ছাড়াই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের পরে হকাররা শান্তিপূর্ণভাবেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ সময় হাফিজুল ইসলাম বলেন, এই সমস্যাটি দীর্ঘ দিনের সমস্যা। সমস্যাটি কখনোই সমাধান হচ্ছে না। দিনের পর দিন সমস্যাটি আরও গভীর আকার ধারণ করছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত