নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ জেলা আইন শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুটপাত হকার মুক্ত রাখা হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যাক্ত করা হয়েছে। সভায় এই জেলার তিন প্রশাসনিক কর্মকর্তা একই সুরে নারায়ণগঞ্জ শহরকে যানজট মুক্ত রাখার কথা বলেন। ফুটপাতগুলো হকার মুক্ত রাখার অঙ্গীকার পূনর্ব্যাক্ত করেন। সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল এবং র্যাব-১১ এর সিও লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা উপস্থিত ছিলেন। রবিবার (১০ মার্চ) জেলা আইন শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় তিনজনই ফুটপাতগুলো জনগনের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত রাখা হবে বলে দৃঢ় ভাবে ঘোষনা করেন।
এই মাসিক সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই এবং নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন এ বিষয়ে আলোকপাত করেন। তারা হকারদের সাম্প্রতিক ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরন এবং জোর করে ফুটপাত দখল করার যে ঘোষনা তারা দিয়েছে এ বিষয়ে প্রশাসন কি করবে তা জানতে চান। জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরকে যানজটমুক্ত রাখার জন্য যা কিছু করনীয় তার সবই করা হবে। হকারদের ফুটপাত দখল করতে দেয়া হবে না। নারায়ণগঞ্জের মানুষ যাতে স্বচ্ছন্দে জীবন যাপন করতে পারে তার জন্য প্রশাসন আন্তরিক প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রাখবে। সভায় একজন হকার নেতার ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, কে কি বললো না বললো এসব দেখে পুলিশ কোনো কিছু করবে না। পুলিশ তার নিজস্ব গতিতে আইনের প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে। ফুটপাতে হকার বসতে দেয়া হবে না। একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন র্যাব-১১ এর সিও তানভীর মাহমুদ পাশা। তিনিও নারায়ণগঞ্জকে যানজট মুক্ত রাখার জন্য যা করনীয় তার সবই করবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।
আইনশৃংখলা কমিটির এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় মূলত তিনটি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ন আলোচনা হয়। ১) জেলা ব্যাপি ভূমি দস্যুদের দমনে করনীয় ২) কিশোর গ্যাং দমনে করনীয় এবং ৩) নারায়ণগঞ্জের ফুটপাতগুলো হকার মুক্ত রাখা নিয়ে করনীয়। ভূমি দস্যুদের দমন করা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন ভুক্তভোগী কেউ যদি জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগ করে তাহলে তিনি ইউএনওদের মাধ্যমে এবং পুলিশ সুপারকে সঙ্গে নিয়ে থানা গুলির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন। এছাড়া জেলার সব কয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করে দিক নির্দেশনা দেবেন বলে জানান। যে কোনো মূল্যে ভূমি দস্যুদের দমন করা হবে।
কিশোর গ্যাং দমনে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। আর সেটা হলো পাঁচ জনের বেশি কোথাও কিশোর যুবকেরা অকারনে জড়ো হলে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে। পুলিশ সুপার এই ঘোষনা দেন এবং জেলা প্রশাসক ও র্যাবের সিও তার এই ঘোষনাকে সমর্থন জানান। র্যাব-১১ এর সিও লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা কিশোর গ্যাং এর শেল্টার দাতাদের নামের তালিকা চান। জেলা প্রশাসক তাকে এই তালিকা সরবরাহ করার কথা জানান।
মূলত এভাবেই নারায়ণগঞ্জ জেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি কিভাবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে রাখা যায় এ ব্যাপাওে দীর্ঘ আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সভায় সোনারগাঁয়ের এমপি কায়সার হাসনাত উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যানগন, বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষদের প্রতিনিধিগন এবং প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।