নওগাঁর মহিষবাথান ঘাটে ব্রীজ নির্মাণ না হওয়ায় দূর্ভোগ !

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নওগাঁ প্রতিনিধি ) : নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই নদীর মহিষবাথান ঘাটে ব্রীজ নির্মাণ না হওয়ায় এলাকাবাসী নানা দূর্ভোগের শিকার হওয়ার পাশাপাশি দেড় শতাধীক শিক্ষার্থী স্কুলে যাতায়াত ব্যহত হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে নদী ভরে গেলে প্রায় ১ মাস স্কুলে শিক্ষাদান থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে এসব শিক্ষার্থী। এ সময় নদীর পূর্ব পাড়ের ছেলে মেয়েদের জন্য স্কুল বন্ধ রাখা হয়। যুগযুগ ধরে এ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় ঐ এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের।

এলাকাবাসী জানায়, খাদ্যের ভান্ডার হিসাবে পরিচিত মহাদেবপুর উপজেলার মহিষবাথান হাট। ধান চাল বিক্রির ঐতিহ্যবাহী হাট বলে পরিচিত মহিষবাথান। এখানে রয়েছে সরকারী খাদ্য গুদাম, সোনালী ব্যাংক, হাই স্কুল, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডার গার্টেন স্কুল, ১৪-১৫টি এনজিওর অফিস। তারপরেও আত্রাই নদীর মহিষবাথান ঘাটে ব্রীজ নির্মাণ হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এনায়েতপুর ইউনিয়নের রোধইল, হোসেনপুর, কালনা, শেরপুর, ইনদ্রাই, মেরা এই ৬টি গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী স্কুল করতে পারে না। মহিষবাথান উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র ফরিদুল ইসলাম, সাগর দেবনাথ, ৮ম শ্রেণির ছাত্রী আইরিন, আর্জৃমান, ৭ম শ্রেণির ছাত্রী জুঁই, রোবসানা, আন্নি খাতুন, সজিব বলে বর্ষা মৌসুমে নদী ভরে গেলে নদীর পারাপার দূরত্ব বেড়ে যায়। সঠিক সময়ে নৌকা পাওয়া যায় না। সাধারণ মানুষের সঙ্গে চাপের মধ্যে নৌকা পারাপারে অনেক সময় ছাত্র-ছাত্রীরা বই খাতা নিয়ে নদীতে পড়ে যায়। আবার ঘাটে নৌকার জন্য বসে থেকে স্কুলে দু-একটি ক্লাস পার হয়ে যায়। ভরা মৌসুমে নদীর পূর্ব পাড়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্কুল ছুটি ঘোষনা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে।

মহিষবাথান স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন কুমার জানান, মহিষবাথান ঘাটে ব্রীজ নির্মাণ খুবই জরুরী। এখানে ব্রীজ নির্মাণ এলাকাবাসীর প্রাণের দাবী। বর্ষা মৌসুম এলেই স্কুলের শিক্ষাদান ব্যহত হয়ে পড়ে। নদীর ঘাট পারাপারের দূরত্ব বেড়ে যায়। নদীর ভরা মৌসুমে পূর্ব পাড়ের দেড় শাতাধীক ছেলে-মেয়ে স্কুলে আসতে পারে না। হাতুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন নদীর ঘাট পর্যন্ত দুইপাড়ে পাকা রাস্তা রয়েছে।

বদলগাছী, মাতাজিহাট হয়ে মহিষবাথান ঘাট পার হয়ে পোরশা উপজেলার সংগে সরাসরি সংযোগ সহ দেশের অভ্যন্তরে গুরুত্বপূর্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টি হলেও মহিষবাথান ঘাটে ব্রীজ নির্মানের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এনায়েতপুর ইউপির সাবেক মেম্বার নূর মোহাম্মদ, ঘাট ইজাহার দেলোয়ার হোসেন, সাইদুল ইসলাম সহ এলাকাবাসী জানান, নদীর দুই পারের স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকার লোকজন হাট-বাজার সহ বিভিন্ন কাজে মহিষবাথান যেতে হয় জন্যই এখানে ব্রীজ নির্মাণ করা খুবই জরুরী।

এনায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান জানান, বর্ষা মৌসুমে নদীর পূর্ব পাড়ের ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল করতে পারে না এটা জটিল সমস্যা। তাছাড়া এলাকার কৃষি পণ্য নিয়ে ঘাট পারাপারে এলাকাবাসীকে নানা দূর্ভোগ পোহাতে হয়। আমি স্থায়ীয় এমপি ছলিম উদ্দীন তরফদারকে মহিষবাথান ঘাটে ব্রীজ নির্মান করার কথা বলেছি।

মহাদেবপুর উপজেলা প্রকৌশলী সুজন মাহমুদ এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, দুই বছর পূর্বে মহিষবাথান ঘাটে ব্রীজ নির্মাণের আবেদন করা আছে এখনো অনুমোদন পায়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবারক হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে খোজ নিয়ে দেখব।

add-content

আরও খবর

পঠিত