জাপা নেতা আবুল জাহেরের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : বন্দরে সুরিয়া বেগম নামে এক অসহায় নারীর জমি দখলে নিতে মরিয়া জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আবুল জাহেরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, থানার ওসির কক্ষে ছেলেকে প্রাণনাশের হুমকী দেয়ারও অভিযোগ উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী। এ ব্যপারে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ প্রদান করেছেন সুরিয়া বেগম ।

অভিযোগে সুরিয়া বেগম বলেন, ২০০২ সালের ২০ জুন সাব কবলা দলিল মূলে সুরিয়া বেগম ৬ শতাংশ জমিটি ক্রয় করেন। এরপর থেকে ওই জমিতে শাক সবজির চাষ করে ভোগ দখল করে আসছেন। গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে জাতীয় পার্টির নেতা আবুল জাহেরের লোকজন ওই জমির চারপাশে থাকা জমিতে বালু ভরাট শুরু করে। এক পর্যায়ে সুরিয়া বেগমের জমিতেও বালু ভরাট করতে থাকে। সুরিয়া বেগম প্রতিবাদ করলে আবুল জাহেরের লোকজন বলে, পরে হিসাব করে বালুর দাম দিয়ে দিতে। আবুল জাহের প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি কিছু বলেননি। পরে তিনি তার জমিতে দেয়াল দিতে গেলে আবুল জাহেরের লোকজন তাতে বাধা দেয়। স্থানীয়দের সহায়তায় জমিতে তিনি বাউন্ডারী দেয়াল দিলেও পরবর্তীতে আবুল জাহেরের লোকজন তার জমি জোরপূর্বক দখলে নিতে চায়। এ নিয়ে গত ৯ মে বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলামের কক্ষে শালিস বৈঠকে বসলে এক পর্যায়ে আবুল জাহের ক্ষিপ্ত হয়ে সুরিয়া বেগমের ছেলে উজ্জলকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসময় তিনি উজ্জলকে বলেন, তোর কত বড় সাহস, তোর কলিজা ছিরে ফেলবো। একথা বলেই অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন আবু জাহের।

এ প্রসঙ্গে জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আবুল জাহের জানায়, সেই জমির তিনি ক্রয় সূত্রে মালিক। মিউটেশনও তার নামে রয়েছে। ওই জমির মালিক যিনি দাবি করছেন জমি যদি তার নামেই হতো তাহলে তিনি জমির মিউটেশনের কাগজ দেখাক। জমির কাগজপত্র যার সেই জমির প্রকৃত মালিক হবে। জনৈক সোবহান মোল্লা জমিটির দাবিদার। সোবহান মোল্লার সঙ্গে তিনি ব্যবসায়িক ভাবে জড়িত।

প্রানণাশের হুমকী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওসি ডেকেছিলেন তাই আমি একাই গিয়েছিলাম। কিন্তু গিয়ে দেখি ওই নারী বহিরাগত সন্ত্রাসী প্রকৃতির যুবকদের সঙ্গে নিয়ে গেছে। আমি জনপ্রতিনিধি ছাড়াও একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমিও তো লোকজন নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু আমি সেটা করি নাই। কিন্তু এখন আমার নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি কাউকে হুমকি দেইনি ।

এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৯ মে থানায় জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি সমাধানের চেষ্ঠা করেছি। আসলে এটা কোন বৈঠক নয়। সুরিয়া দাবি করেছেন তিনি জমি ক্রয় করে বাউন্ডারী দিয়েছেন । অপরদিকে আবু জাহের দাবি করছেন তিনিও জমি ক্রয় করেছেন। কিন্তু অসহায় গরীব নারীটি জমিটি যে কিনেছে, তা সত্যি। তারপরেও উভয় পক্ষের কাগজাদি নিয়ে বসলে বুঝা যাবে। কিন্তু আমরা থানা পুলিশ অসহায় সুরিয়া বেগমের পাশে আছি। হুমকী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই ধরনের কোন কিছু ঘটেনি।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মিডিয়া ওয়িং ডিআইও-২ মো. সাজ্জাদ রোমন জানায়, পুলিশ সুপার মাদক, সন্ত্রাস ও ভূমিদস্যুতার ব্যপারে জিরো টলারেন্স অবলম্বন করছেন। এছাড়াও কোন অসহায় নারীর জমি দখলের চেষ্টা যদি কেউ করে থাকে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

add-content

আরও খবর

পঠিত