নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : আসছে সার্বজনীন উৎসবের মাস বৈশাখ। আসছে বাঙালির বাংলা নববর্ষ। দেশে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বর্ষবরণও একই সময়ে। সমতল ও পাহাড়ে যুগপৎ উৎসবের সময় সামনে। উৎসবগুলোর সাথে জড়িয়ে আছে এই জনপদের প্রাচীন জীবনাচার, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। আবার কালের পরিক্রমায় উৎসবের ধরণেও এসেছে পরিবর্তন।
প্রাচীন ভারতীয় কৃষি সভ্যতার অংশ বাংলাদেশ। মোঘলদের শাসন চালুর পর খাজনা আদায়ে মূলত হিজরি সনের প্রচলন হয়-যা নির্ভর করতো চাঁদের হিসেবের ওপর। এতে বাংলায় ফসল উৎপাদন ও খাজনা পরিশোধে সমস্যার সম্মুখিন হয় কৃষকরা। সৌরবছর যেখানে ৩৬৫ দিন, সেখানে চন্দ্র বছর ৩৫৪ দিনে; ১০ দিনের পার্থক্যে কৃষি ফলন এবং সংগ্রহের সাথে হিজরি সন ছিল সাংঘর্ষিক।
এ সমস্যা উপলব্ধি করে তখনকার সম্রাট জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবর পঞ্জিকা সংস্কারের উদ্যোগ নেন। ইরানের জ্যোতির্বিজ্ঞানী আমির ফতেহউল্লাহ সিরাজীকে এনে বাংলা বর্ষ মুলত ফসলি সন তৈরি করেন। সেই থেকে চৈত্রের শেষের দিনগুলোতে হিসেব-নিকেশ মিটিয়ে বৈশাখের প্রথম দিন থেকে নতুন বছরের যাত্রা, উৎসবের পরিবেশ তৈরি করতো তৎকালীন গ্রামীণ সমাজে।
ইংরেজরা ক্ষমতা নিয়ে বাংলা পঞ্জিকাকে গৌণ করে। যদিও ১৯১৭ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের বিজয় কামনায় পহেলা বৈশাখে কীর্তন ও পূজার আয়োজন হয়েছিল বলে জানা যায়। এর পুনরাবৃত্তির ঘটে ১৯৩৮ সালেও। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ যায়, ভারত ভাগ হয়। পাকিস্তানী সরকার বাংলাদেশে বৈশাখ উদযাপনে ও বাংলা সংস্কৃতির চর্চায় বাধা হয় ।
একাত্তরে স্বাধীনতার পর বৈশাখী উৎসব বহুমাত্রিক রুপ পেতে থাকে। বৈশাখে বাংলা নববর্ষ বরন এক মাত্র ধর্মনিরপেক্ষ সার্বজনীন উৎসব হয়ে উঠেছে দেশে।