আগামী মার্চে ৫শ শয্যায় উন্নীত হচ্ছে খানপুর হাসপাতাল

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : শহরের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় রূপান্তরিত করতে আগামী মার্চ মাসের প্রথম দিকেই ১৫ তলা বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ভবনটির নির্মাণ কাজের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহেই হাসপাতালটির বর্তমানে সি ব্লকের ভবনটির ভাঙ্গা শুরু করার মধ্য দিয়ে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজের শুরু হতে যাচ্ছে। সরকারী অর্থায়নে ১৫ তলার ফাউন্ডেশনে আপাতত ৭ তলা ভবন নির্মিত হবে। পরবর্তীতে বাকি ৮তলার উর্ধমূখী সম্প্রসারণ করা হবে। তবে নতুন ভবনের নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া সময় পর্যন্ত যাতে হাসপাতালে রোগীদের সেবা প্রদান কার্যক্রম যাতে বন্ধ না থাকে সে ব্যাপারে আপদকালীন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বুধবার ৩ জানুযারী বিকেল ৫টায় হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে জেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির ৮ম মাসিক সভায় এ সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

সভায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান হাসপাতালের উন্নয়ন কর্মকান্ডে বড় ধরনের সফলতা আসায় কমিটির সকল সদস্যকে ধন্যবাদ প্রদান সহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেই সাথে তিনি বলেন, আজকের সভাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। সভায় হাসপাতালের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। অথচ কমিটির অনেকেই আজকে উপস্থিত হয়নি। আমি সকলের প্রতি অনুরোধ করবো যারা গুরুত্বপূর্ন সভায় উপস্থিত থাকতে পারবেন না অথচ বিষয়টি কমিটিকে অবহিত করবেন না তারা যেন কমিটি থেকে সেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। এছাড়াও সরকারী বিধি মোতাবেক আগামী মাসিক সভার পূর্বে কমিটির দুইজন সদস্যের ব্যাপারে সংশোধনী এনে স্বচ্ছতা বজায় রাখার অনুরোধ রাখেন।

নতুন ভবনের নির্মাণ কাজের প্রসঙ্গে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, বর্তমান কমিটি অত্যন্ত শক্তিশালী। এখানে সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা, ডিসি, এসপি, ব্যবসায়ী নেতা থেকে সাংবাদিক পর্যন্ত সবাই আছেন। নতুন ভবনের নির্মাণে যিনি কাজ করবেন তিনি যেই হোক না কেন যত প্রভাবশালী এবং যার লোকই হোকনা কেন অবশ্যই কাজের তদারকি করতে হবে। কাজে কোন প্রকার গাফলতি পাওয়া গেলে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া চলবে না।

এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান যিনি সম্প্রতি পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি ভবনের নির্মাণ কাজের তদারকির জন্য একটি সাব কমিটি গঠন করার প্রস্তাব রাখেন। তার এমন প্রস্তাবে উপস্থিত সকল সদস্য সম্মতি জানালে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কমিটির সভাপতি এমপি সেলিম ওসমান সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর নেওয়া সিনিয়র কনসালন্টেন্ট শফিউল আলম ফেরদৌসকে আহবায়ক এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ডাক্তার শাহনেওয়াজ চৌধুরীকে যুগ্ম আহবায়ক করে একটি তদারকি কমিটির মৌখিক ভাবে অনুমোদন দেন এবং সেটি রেজুলেশন ভুক্ত করে প্রয়োজনে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে চূড়ান্ত অনুমোদনের পরামর্শ দেন।

এদিকে ডাক্তার শফিউল আলম ফেরদৌস বক্তব্যে হাসপাতালের অভ্যন্তরে স্থায়ী ভাবে একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করার প্রস্তাব রাখেন।

সভায় এমপি সেলিম ওসমান আরো বলেন, খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। এটি সম্পন্ন হলে নারায়ণগঞ্জে উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজ স্থাপনের কাজ এক ধাপ এগিয়ে যাবে। তখন আমরা খানপুর ৫০০ শয্যা এবং ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে সরকারের কাছ থেকে মেডিকেল দাবী করতে পারবো। তবে এ ব্যাপারে আমাদের হাতে খুব বেশি সময় নেই। এখন থেকেই আমাদের মেডিকেল কলেজের প্রস্তাবনা তৈরি করা শুরু করতে হবে। এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রৌকশলী সহ উপস্থিত সবাইকে প্রস্তাব তৈরি করার কাজ শুরু করতে বিশেষ ভাবে অনুরোধ রাখেন।

হাসপাতালের তত্ত্ববধায় ডাক্তার মোতালেব মিয়া বক্তব্যে বিগত দিনে হাসপাতালের উন্নয়নে এমপি সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২টি অ্যাম্বুলেন্স, জেনারেটর মেরামত, বিশুদ্ধ খাবার পানির পাম্প স্থাপন, সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন, আধুনিক সম্মেলন কক্ষ নির্মাণ, বৈদ্যুতিক পাখা সহ সার্বিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে তাদের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

জেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার এহসানুল হক, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রৌকশলী মাহাবুবুর রহমান, পরিচালনা কমিটির সদস্য ডাক্তার শাহনেওয়াজ চৌধুরী, ডাক্তার শফিউল আলম ফেরদৌস, জিএম ফারুক, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আশরাফ  সহ পরিচালনা কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।

add-content

আরও খবর

পঠিত