নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ শহরের কিল্লারপুল এলাকায় একটি মাজারের দান বাক্স লুটকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগের নেত্রী মাহবুবা আক্তার নুপুরকে হত্যার চেষ্টায় আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে তার পরিবার সহ স্থানীয়রা। ২৫ই এপ্রিল রবিবার বিকালে কিল্লারপুল এনায়েত আলী চিশতী মাজারের সামনে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে আওয়ামীলীগের নেত্রী মাহবুবা আক্তার নুপুরের স্বামী মহিউদ্দিন বলেন, আমি ও আমার স্বপরিবার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রতিদিনই আসামীরা আমার পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে।
প্রশাসনের উদ্দেশ্য করে মহিউদ্দিন বলেন, নুপুরকে হত্যার চেষ্ঠায় সিসি ফুটেজ রয়েছে। সেখানে আসামীদের ছবি স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। তবুও প্রশাসনের চোঁখে ফাঁকি দিয়ে প্রকাশ্যে আসামীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা চাই সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, এর আগে ২২ই এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের কিল্লারপুল এলাকায় একটি মাজারের দান বাক্স লুটকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আওয়ামীলীগের নেত্রী মাহাবুবা আক্তার নুপুর নামে এক নারী লুুটপাটে প্রতিবাদ জানালে তার উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
এ সময় নিজেকে বাচাঁতে পাশের একটি দোকানে লুকিয়েও ওই নারী শেষ রক্ষা পায়নি। সন্ত্রাসীরা দোকানে প্রবেশ করে ওই নারীকে টেনে হিচড়ে বাহিরে নিয়ে যায় এবং দাড়ালো অস্ত্র দিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। এ ঘটনায় ১০ জনকে বিবাদী করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে ওই ভুক্তভোগী নারী। ইতমধ্যে ওই ঘটনার সময় দোকানে থাকা একটি সিসিটিভি ফুটেজে ধারন হওয়া ভিডিওটি পাওয়া গেছে। যেখানে ওই নারীর উপর হিংস্র হামলার দৃশ্যটি দেখা যায়।
অভিযোগে জানা যায়, কিল্লারপুল এলাকার এনায়েত আলী চিশতিয়া মাজারের প্রধান খাদেম হিসেবে দেখাশোনা করে আসছিল মোছাম্মৎ মাহবুবা আক্তার নুপুর। মাজার নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের হিসেবে ২২ই এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় সন্ত্রাসী ইরান, রিপন, হুজুল, ফারুক, আমির, মনির, লাদেন, নিক্কাত, রনি ও আহমদ মিয়া দুপুর সাড়ে ১২টায় মাজারের ভিতরে প্রবেশ করে দান বাক্স লুট করার চেষ্টা চালায় এবং মাজারের তালা ভেঙ্গে ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় মাহবুবা আক্তার নুপুর তাদের বাধা প্রদান করলে সন্ত্রাসীরা নুপুরের উপর ক্ষিপ্ত হলে নুপুর ভয়ে কিল্লারপুলের একটি মোবাইলের দোকানে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে সন্ত্রাসীরা নুপুরকে টেনে হেঁচড়ে দোকান থেকে বের করে নিয়ে রাস্তায় ফেলে উপর্যুপরি লাঠিসোটা এবং ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে।
এ সময় নুপূরের সঙ্গে থাকা নগদ ১৬ হাজার টাকা, ১ ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ও একটি বেসলাইট ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। তার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজনও সন্ত্রাসীদের ভয়ে কাছে আসেনি। নুপুরকে মারধর ও ছুরিকাঘাতের পর জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায় এবং মামলা মোকদ্দমা করলে যে কোন সময় দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে নুপুরের আত্মীয়স্বজন খবর পেয়ে দৌড়ে ছুটে এসে নুপুরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসা গ্রহণ করে আহত নুপুর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এবং সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায়।