নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের প্রতি মালয়েশিয়া সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণ নিয়ে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে সাক্ষাৎকার দেওয়া বাংলাদেশি নাগরিক নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকার সন্তান রায়হান কবির অবশেষে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন।
২১ আগস্ট শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রায়হান কবিরের বাবা শাহ আলম গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট শুক্রবার রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর রায়হানকে রিসিভ করেছি। ছেলে এখন আমার কাছে। কোনো সমস্যা নেই, সে সুস্থ ও ভালো আছে। ছেলেকে ফিরে পেতে সাংবাদিকরা বেশি সহায়তা করেছেন এমনটা জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
এর আগে মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ৯টায় রায়হান করিবকে কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রাত ১১টা নাগাদ তাকে ঢাকাগামী মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এদিকে সম্প্রতি আল জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত একটি তথ্যচিত্রে রায়হান কবির বলেছিলেন যে, অনিবন্ধিত বিদেশি শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে শত শত অভিবাসীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। এরপর দুই সপ্তাহ ধরে খোঁজ করে পুলিশ গত মাসে রায়হান কবিরকে গ্রেপ্তার করে। প্রায় ২৬ মিনিটের ওই ডকুমেন্টারিতে মালয়েশিয়ায় আটকে পড়া অবৈধ শ্রমিকদের বেহাল দশার কথা তুলে ধরা হয়।
রায়হান কবির ওই তথ্যচিত্রে এ সম্পর্কে কুয়ালালামপুর কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছিলেন। ওই ডকুমেন্টারিতে বলা হয়, মহামারির মধ্যে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ দুই হাজারেরও বেশি অনিবন্ধিত শ্রমিককে আটক করেছে এবং করোনাভাইরাস লকডাউনের মধ্যে তাদের আটকে রাখা হয়েছে।
ওই ভিডিওটি প্রচারের পর থেকেই মালয় সোশ্যাল মিডিয়াতে রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়। এর জেরে কর্তৃপক্ষ তার ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
মালয়েশিয়ায় রায়হান কবিরের পক্ষে আইনি লড়াই করেন সুমিতা সান্তিনি কৃষ্ণা এবং সেলভারাজা চিন্নিয়া। মিডিয়ার প্রশ্নের জবাবে সুমিতা বলেছেন, শুক্রবার বিকালে পুত্রজয়া ইমিগ্রেশন অফিস থেকে সরাসরি বিমাবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় রায়হানকে। সব প্রক্রিয়া শেখ করার পর তাকে স্থানীয় সময় রাত ১১টায় একটি বিমানে তুলে দেয়া হয়। এ সময় তার করোনা ভাইরাস টেস্ট নেগেটিভ ছিল। যেহেতু তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করেনি মালয়েশিয়া পুলিশ, তাই তাকে কোনো আইনগত জটিলতায় পড়তে হয় নি।
রায়হান কবিরের পরিবারের বসবাস নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলায়। স্থানীরা বলছেন, তিনি নিজের বই ও অর্থ দিয়ে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতেন। এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার।