অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ সদা তৎপর : এসপি হারুন

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পুলিশ হত্যাকান্ড ও সোনারগাঁয়ে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধারের পর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। ৩ মার্চ সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এ দুইটি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

পুলিশ সুপার জানান, রূপগঞ্জের পুলিশ সদস্য রাসেল হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামী আ: মান্নান (৪৬), এবং মাসুদকে (২৬) নরসিংদীর মাধবদী বাজার আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা পুলিশ সদস্য রাসেলকে কুপিয়ে হত্যা করেছে মর্মে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে বলে জানা যায়। পুলিশ সদস্য রাসেল হত্যা মামলার আটককৃত আসামীদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করছে। মামলার রহস্য উদঘাটন সহ আসামী গ্রেফতার ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ সদা তৎপর।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আরেকটি হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন প্রসঙ্গে বলেন, চলতি মাসের ২ মার্চ সকালে সোনারগাঁয়ের কার্পুদী এলাকায় ব্রক্ষপূত্র নদীর পাড়ে ফাঁকা জায়গায় একটি অজ্ঞাতনামা পুরুষের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের পর লাশটির পরিচয় বের করতে সক্ষম হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ।

পুলিশ সুপার বলেন, পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে । নিহতের স্ত্রী ও তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়ার মধ্যকার পরকীয়ার জের ধরেই এ হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোসা. রিক্তা বেগম, ভাড়াটিয়া রেজাউল করিম পলাশ (৩০), সহযোগী মাসুম(২৭) ও ইমরান(২৩) কে আটক করেছে পুলিশ। তারা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। হত্যায় ব্যবহৃত চাকুটিও উদ্ধার করা হয়েছে।  আটককৃত আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

 প্রসঙ্গত, গত বছরের  ২১ নভেম্বর সকালে রূপগঞ্জে মাহনা এলাকায় মনোয়ারা বেগম এর জামাতা মনির হোসেন এর বাড়িতে দেশী অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আক্রমন করে। এতে মনোয়ারা বেগম এর ছেলে রাজু ও রাসেলকে গলায় ও বুকে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। উপস্থিত লোকজন গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার পূর্বক চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ সদস্য রাসেল (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। পরে রাসেলের মা রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাসেল বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ঢাকা এসবি ইউনিটে কর্মরত ছিলেন । ছুটিতে বাড়িতে থাকাবস্থায় আসামীরা হামলা করে কুপিয়ে হত্যা করে।

অপর একটি ঘটনায়, চলতি মাসের ২ মার্চ সকালে সোনারগাঁয়ের কার্পুদী এলাকায় ব্রক্ষপূত্র নদীর পাড়ে ফাঁকা জায়গায় একটি অজ্ঞাতনামা পুরুষের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।  পরে অজ্ঞাতনামা লাশটি সিদ্ধিরগঞ্জের এনায়েতনগর এলাকার মৃত আজমত আলীর ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে কালুর (২৫) বলে সনাক্ত করেন তাঁর বড় মো.শামসুল হক। পরে তিনি  অজ্ঞাতনামাদের আসামী কওে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একাধিক টিম সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এবং বন্দর থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত ৪ আসামীকে আটক করেন।

প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, মৃত আমিনুল ইসলাম ওরফে কালু এর স্ত্রী মোসা. রিক্তা বেগমএর সাথে তাদের বাসায় ভাড়াটিয়া রেজাউল করিম পলাশ এর সাথে পরকীয়া প্রেমের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভাবে এই হত্যাকান্ডটি ঘটে।  রেজাউল করিম পলাশ ও মৃতের স্ত্রী রিক্তা  পরামর্শ করে সহযোগী হিসেবে মাসুম ও ইমরানকে নিয়ে ১ মার্চ সন্ধ্যা ৬ টায়  কালুকে বাড়ি থেকে ডেকে আনে। তারা ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় ধারালো অস্ত্র (চাকু) দিয়া গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ ফেলে চলে যায়।

add-content

আরও খবর

পঠিত