নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : প্রায় ১৭ বছর পর ২১শে আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কার্যলয়ের সমুখে সমাবেশে গ্রেনেড হামলার মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকবাল হোসেনকে দিয়াবাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। ২২শে ফেব্রুয়ারি সোমবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, সোমবার রাতে দিয়া বাড়ি এলাকা থেকে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ ২৩ই ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাজধানীর র্যাব মিডিয়া সেন্টারে দুপুর ১২ টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকা হতে একুশে গ্রেনেড হামলার মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীর জঙ্গি ইকবাল হোসেন (ইকবালকে) র্যাবের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ এক অভিযানে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী ইকবাল গ্রেনেড হামলার পর সে এনালগ পাসপোর্ট ব্যবহার করে দেশের বাইরে চলে যায়।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি গ্রেনেড হামলার আসামি ইকবাল ছাত্রদলের একজন সক্রিয় সদস্য ছিল পরবর্তীতে সে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করেন। ২০০৪ সালে একুশে গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশের জন্য একটি কলঙ্কিত ঘটনা এই মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে র্যাব বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট দেশে বীভৎস রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটে। এ দিনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি বিরোধী সমাবেশে মুহুর্মুহু গ্রেনেড হামলায় হয়।
তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিচালিত এ হামলায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী বেগম আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। শুধু গ্রেনেড হামলাই নয়, সেদিন তাদের প্রধান টার্গেটে থাকা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গাড়ি লক্ষ্য করেও চালানো হয় ৬ রাউন্ড গুলি। শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও আহত হন। তার শ্রবণ শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেদিনের গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের পেছনে ছিলেন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, দেশের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাসহ কয়েকজন শীর্ষ জঙ্গি।
এর আগে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। হত্যা মামলায় ১৯ জনকে ফাঁসির দণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ১৯ জনকে ফাঁসি এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ৩৮ জনকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অন্য ধারায় ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুই মামলায় আলাদাভাবে সাজা দেওয়া হলেও তা একযোগে কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।