নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : সরকারকে কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে দেশ থেকে ইসকন সংগঠনকে বিতাড়িত করে নিষিদ্ধের ঘোষণা সহ আল্লাহ ও রাসূলকে নিয়ে কটুক্তিকারীদের ফাঁসিতে ঝুলানোর আইন প্রনয়ণের দাবী জানিয়েছে হেফাজত ইসলাম।
ভোলার ঘটনাকে কেন্দ্র ২৬ অক্টোবর শুক্রবার বাদ জুম্মা নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি মসজিদের সামনে এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করে এ সংগঠনটি। এ সমাবেশে জেলার বিভিন্ন উপজেলার থানা, ওয়ার্ড কমিটির নেতৃবৃন্দ সহ মসজিদের মুসল্লিরা উপস্থিত হন। এসময় বক্তারা উল্লেখিত দাবি তোলে এবং দ্রুত কার্যকর না হলে অবিলম্বে কঠোর আন্দোলনের ঘোষনা দেন।
সমাবেশে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ সরকারকে কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে হেফাজত নেতারা বলেছেন, এই দেশে কোন কিছু ঘটে না, এখানে ঘটানো হয়। ভোলার ঘটনাও ঘটানো হয়েছে। মুসলিম ভাইদের বুকে নির্বিচারে গুলি করেছে পুলিশ। তারপর বলছে, আইডি নাকি হ্যাক হইছে। প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীকে বলি সাপ দেখেছেন, সাপের ছোবল দেখেন নাই, বাঘ দেখেছেন কিন্তু বাঘের থাবা দেখেন নাই। এদিকে, মহাসমাবেশকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সমাবেশ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে র্যাব ও পুলিশ সদস্যের উপস্থিতি দেখা যায় ।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলাম দুইটি জোড়ালো দাবি করেন। দাবিগুলো হলো, দেশ থেকে ইসকন সংগঠনকে বিতাতিড়িত করে নিষিদ্ধের ঘোষণা এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তিকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আইন প্রনয়ন করে ভোলার ঘটনায় দায়ীদের ফাঁসি।
দাবির বিষয়ে বক্তারা বলেন, এদেশে একের পর এক ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। ভারতকে কী দিলেন আর কী আনলেন এ নিয়ে যখন তুমুল আলোচনা তখনই আবরার হত্যা হলো। আবরার নিয়ে যখন আলোচনা, তখন ভোলায় আমাদের মুসলিম ভাইদের নির্বিচারে হত্যা করা হলো।
সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের বক্তব্য ধরে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভোট চুরি করে হোক আর রাতের আধারেই হোক ক্ষমতায় তো আসছেন সুতরাং সব কিছুর দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ইসলাম নিয়ে কটুক্তিকারীর যদি মৃত্যুদন্ডের আইন না করা হয় তাহলে এই সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে দেয়া হবে না। ভোলার ঘটনায় যারা অপরাধী তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন। ইসকনকে নিষিদ্ধ করেন। এসব দাবি না মেনে নিলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, শাপলা চত্ত্বরে রক্ত কিন্তু আমরাই দিয়েছি ভুলে যাবেন না। বাঘ দেখেছেন, বাঘের থাবা দেখেন নাই। আপনাকে কিন্তু ভারত ক্ষমতায় রাখতে পারবে না। ভোলার ঘটনায় সঠিক তদন্ত করে বিচার না করলে আপনার ক্ষমতার মসনদ কিন্তু টিকবে না। মুসলমানরা না থাকলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হতে পারতো না। মুসলমানরা চাইলে ওই ক্ষমতা আবার ছিনিয়েও নিতে পারে। ভোলায় আমার ভাইদের হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইডি হ্যাক হয়ে গেছে। সময় থাকতে ঠিক হন নইলে আপনিও হ্যাক হয়ে যাবেন।
সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতের আমির আব্দুল আউয়াল বলেন, আপনি আপনার গদি ঠিক রাখার জন্য যদি এই আইন নিশ্চিত না করেন তাহলে কেয়ামতের ময়দানে আপনার শাফায়েত হবে না। আপনাকে ভারত কোনদিন গদিতে রাখতে পারবে না। আল্লাহ না চাইলে কোন রাষ্ট্র সরকার আপনাকে গদিতে রাখতে পারবে না।
এ সময় ফেসবুকে ধর্মীয় উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে কুমিল্লা থেকে দেওভোগ মাদ্রাসার এক ছাত্রের গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা ও তার মুক্তির দাবি জানান আব্দুল আউয়াল। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, ওলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন কাসেমী, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি সিরাজুল মামুন প্রমুখ।