স্বামী আমেরিকা প্রবাসী, ঝুলন্ত লাশ গৃহবধূ !

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( সৈয়দ সিফাত লিংকন ) : একুশ বছর বয়সী নববধূ সুমাইয়া আক্তার ঝড়া। মুন্সিগঞ্জের রামপালের সেন্টু বারীর মেয়ে সে। তার স্বামী ফাহাদ হোসেন বাবু আমেরিকা প্রবাসী । গত ১৬ দিন আগেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় সুমাইয়া আক্তার ঝড়া। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস মেহেদীর রং মুছতে না মুছতেই সুমাইয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটল। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাতে নগরীর খোয়ারপট্টি এলাকার ডাক্তার বাড়ী থেকে নব বিবাহিতা সুমাইয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ।

তবে এ মৃত্যুকে কোনভাবে মেনে নিতে পারছেনা সুমাইয়া আক্তার ঝড়া এর পরিবার। নিহত গৃহবধূর বড় ভাই রিংকু অভিযোগ করে প্রতিবেদককে জানায়, দীর্ঘ ১০ বছর বহু তদবির, আকুতি মিনতী করে নগরীর খোয়ারপট্টি এলাকার ডাক্তার বাড়ীর ফারুক হোসেনের ছেলে ফাহাদ হোসেন বাবু গত ১৬ দিন আগে মুন্সিগঞ্জের রামপালের সেন্টু বারীর মেয়ে সুমাইয়া আক্তার ঝড়াকে বিয়ে করে।

পারিবারিকভাবে সুমাইয়া আক্তার ঝড়ার সাথে ফাহাদ হোসেন বাবুর বিয়ে হওয়ার পর গত ৪ দিন আগে ঝড়াকে রেখে ওর স্বামী চলে যায় আমেরিকায়। নগরীর খোয়ারপট্টি এলাকার ডাক্তার বাড়ী বাবুর বাবার বাড়ীতে নববধূ ঝড়াকে রেখে যাওয়ার পর থেকে ওর দুই ননদ ও ননদ এ্যানির  স্বামীর সাথে ঝগড়া শুরু হয়।

সুমাইয়া আক্তার ঝড়া বিষয়টি ফোনের মাধ্যমে ওর বাবা ও মাকে জানানোর পর ২৭ মার্চ সকালে ঝড়ার বাবা মা ওর শ্বশুরবাড়ীতে এসে মেয়েকে তাদের বাড়িতে নেয়ার কথা জানায় । এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ্যানির স্বামী ঝড়াদের বাড়ীতে মোবাইল যোগে ফোন করে ঝড়ার মা নাজমা বেগমকে জানায় যে, ঝড়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

এদিকে মেয়ের মৃত্যুর কথা শুনে ঝড়ার বাবা মা , একমাত্র ভাই ও আত্মি¡য় স্বজনরা ছুঁটে আসে নারায়ণগঞ্জের খোয়ারপট্টির ডাক্তার বাড়ীতে । এসেই দেখে তাদের সন্তানের মৃতদেহ । শুরু হয় বাবা, মা, ভাই ও স্বজনদের বুকফাটা আর্তনাদ। মেয়ে হারানোর বুক ফাটা আর্তনাদে আশে পাশের লোকজন ছুঁটে আসে।

ঝড়া কিভাবে মারা গেছে এই প্রশ্নের উত্তরে ননদ এ্যানির স্বামী জানায় গলায় ফাঁস দিয়েছে । ঘরের ফ্যানের সাথে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

অন্যদিকে ঝড়ার বড় ভাই রিংকু অভিযোগ করে বলেন, তার একমাত্র বোন আত্মহত্যা করতে পারে না, ঝড়ার দুই ননদ ও ননদের স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ীর লোকেরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। বোনের অকাল মৃত্যুতে শোকে কাতর রিংকু চিৎকার করে কাঁ আর বলতে থাকে তোর আর আমেরিকা যাওয়া হলোনারে বোন। তোকে লাশ বানিয়ে বাপের বাড়ীতে ফিরিয়ে দিল ওরা। ওর স্বামী আমেরিকা যাওয়ার আগে আমার সামনে এয়ারপোর্টে বিদায় বেলায় ঝড়াকে বলে গিয়েছিলো, তুমি চিন্তা করবে না আমি আগামী একমাসের মধ্যে তোমাকে আমেরিকা আমার কাছে নিয়ে যাব।

এ ব্যপারে সদর মডেল থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি মিজানুর রহমান জানায়, আমরা সুমাইয়াকে ঝুলন্ত অবস্থায় পেয়েছি। পুলিশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে এরআগে কিছু বলা যাচ্ছেনা।

add-content

আরও খবর

পঠিত