নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, নির্মোহ-নির্লোভ এবং সততার মূর্তপ্রতীক, আওয়ামী লীগের দুই বারের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আজ ৩ জানুয়ারি শুক্রবার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৯ সালের এই দিনে ব্যাঙ্ককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাত্র ৬৮ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আমৃত্যু তিনি রাজনীতিকে একটি ব্রত হিসেবে নিয়ে আজীবন নিষ্ঠা এবং সততার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে গেছেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বিপ্লবী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক চক্র হত্যার পর ৩ নবেম্বর কারাগারে সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতাকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যুক্তরাজ্য চলে যান। দীর্ঘ প্রবাস জীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যুক্তরাজ্যে বসবাসকালে সৈয়দ আশরাফ লেবার পার্টির সদস্য হন এবং যুক্তরাজ্যের রাজনীতির সঙ্গে স্বক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অষ্টম জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সদস্য সৈয়দ আশরাফ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সৈয়দ আশরাফ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর তিনি আবারও ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে মন্ত্রণালয় পরিবর্তন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি এক কন্যার জনক। তার স্ত্রী শিলা ইসলাম ২০১৭ সালের অক্টোবরে মারা যান।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্র লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।