সারাদেশে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহন চলছে

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে একযোগে শান্তিপূর্ণ ভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে । আজ ৩০ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোট গ্রহণ। দেশের ২৯৯ আসনে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে।

নির্বাচনের আগের রাতে চট্টগ্রামে ও লক্ষীপুরে বিএনপি-জামায়াতের হামলায় নিহত হয়েছে দুই যুবলীগ কর্মী। এছাড়া নোয়াখালীতে ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ব্যালট বাক্সসহ ভোটের সরঞ্জাম ছিনতাই করা হয়েছে।  এতে আহত হয়ে প্রিজাইডিং অফিসারসহ ছয়জন। এছাড়াও আরও কয়েকটি জেলায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, আজ সকালে নোয়াখালী-৩ আসনের পূর্ব বাবুনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে নির্বাচনী সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

শুক্রবার সকাল আটটায় শেষ হয় নির্বাচনি প্রচারণা। নির্বাচনি আইন অনুযায়ী, ভোটের আগে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা, সভা-সমাবেশ, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়। অন্যদিকে, নিরাপদ পরিবেশে ভোট আয়োজন সম্পন্ন করতে, রাজধানীসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে র‌্যাব- পুলিশ- বিজিবি ও সেনাবাহিনীর তল্লাশি, টহল চলছে।

নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী মেট্রোপলিটন এলাকায় সাধারন ভোট কেন্দ্রের পাহারায় থাকবেন ১৫ জন সদস্য। এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ন ভোট কেন্দ্রগুলোয় পুলিশের সংখ্যা দুইজন বাড়িয়ে মোট ১৭ জন রাখা হবে।

মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরের সাধারন ভোট কেন্দ্রগুলোতে একজন পুলিশ, ১২ জন আনসার ও ২ জন গ্রাম পুলিশের সদস্য থাকবেন। গুরুত্বপূর্ন কেন্দ্রে দুইজন পুলিশ সদস্যসহ ১২ জন আনসার ও ২ জন গ্রাম পুলিশের সদস্য থাকবেন।

হাওড়, দ্বীপাঞ্চল ও পার্বত্য এলাকায় সাধারন ভোট কেন্দ্রগুলোতে  দুইজন পুলিশ, ১২ জন আনসার ও ২ জন গ্রাম পুলিশের সদস্য থাকবেন। একই এলাকায় গুরুত্বপূর্ন কেন্দ্রে একজন পুলিশ সদস্য বাড়িয়ে ১৭ জন মোতায়েন করা হবে।

সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে ৩৮৯ উপজেলায়। গুরুত্বভেদে প্রতি উপজেলায় ২ থেকে ৩ প্লাটুন মোতায়েন হয়েছে। উপকূলীয় এলাকা ভোলা, কক্সবাজার, নোয়াখালী, বরগুনা, বাগেরহাটে নৌবাহিনীর ৫৫ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জরুরি সময়ে হেলিকাপ্টার সাপোর্ট দেয়ার জন্য বিমান বাহিনীর সদস্যরাও প্রস্তুত আছেন।

শনিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া জানান, রাজধানীতে কোন ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই। সবাইকে ভোট প্রদানের অনুরোধ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সহিংসতা হলে, তার প্রস্তুতি রয়েছে।

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ভোট চলার সময় যেন কেউ পেশীশক্তি ব্যবহার করতে না পারে, সেদিকে সজাগ আছে ডিএমপি। কোন দলের এজেন্টের অনুরোধ, নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা, কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্ন করার চেষ্টা করলে- তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে।

এবারে নিবন্ধিত ৩৯টি দলই তাদের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। দীর্ঘ ১০ বছর পর মুখোমুখি হতে যাচ্ছে, রাজনীতিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুটি দলই জোটবদ্ধভাবে ভোটে অংশ নিয়েছে। একক দল হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা) সব থেকে বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে দলটির ২৯২ জন প্রার্থী রয়েছেন বলে জানা গেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৮০০ এর বেশি প্রার্থী। এর মধ্যে ৫০ জনের মতো রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে, বাকিরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের।

এবার ৩০০ আসনে মোট ভোটার রয়েছেন, ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার। নির্বাচনে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোট কেন্দ্র ও ২ লাখ ৬ হাজার ৪৭৭টি ভোট কক্ষ রয়েছে। একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে গাইবান্ধা-৩ আসনে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। ওই আসনে ভোটারের সংখ্যা চার লাখের বেশি।

এর আগে, ভোটের দিন ভোটারদের কেন্দ্রে আসা ও বাড়ি ফেরা পর্যন্ত সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানান, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

ডিএমপি কমিশনার জানান, ইলেকশন কমিশনের অধীনে এবং ইলেকশন কমিশন জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রতিপালনের মধ্য দিয়ে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব ধরনের ভীতির উর্দ্ধে উঠে, ভোটাররা যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, সে জন্য সমগ্র নগর জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।

ঢাকা শহরের সব গুরুত্বপনূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার দাইয়ত্বে থাকবে র‌্যাব। র‌্যাব-৩ এর সিও এমরানুল হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক, সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদুঘরসহ এ ধরনের যত কেপিআই স্থাপনা রয়েছে, সে সকল স্থানে যেন কোন সহিংসতার ঘটনা ঘটতে না পারে এবং কেউ যেন কোন ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড চালাতে না পারে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

add-content

আরও খবর

পঠিত