নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রির্পোটার ) : মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো: জসিম উদ্দিন বলেছেন, পরিবার ধ্বংসের জন্য একটি মাদকসক্ত সন্তানই যথেষ্ট। মাদকাসক্ত সন্তান যদি কোন পরিবারে থাকে, তাহলে সে পরিবার দোযখে পরিণত হয়। মাদকসেবীদেরকে মাদক গ্রহণে নিরুদসাহিক করার জন্য সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার তাগিদ দিয়ে জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টাই মাদকমুক্ত সমাজ গড়া সম্ভব। প্রতিটি দিন যাতে আমাদের মাদক বিরোধী মনোভাব থাকে এবং প্রতিটি স্লোগানে যাতে মাদকের বিরুদ্ধে স্লোগান হয়। সামাজিক সচেতনতায় আন্দোলনের মাধ্যমে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করতে হবে।
২৬ জুন বুধবার সকাল সাড়ে দশটায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যুথিকা সরকার এর সভাপতিত্বে মাদকবিরোধী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
মানব কল্যাণ পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ মান্নান ভূঁইয়ার সঞ্চলনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম। তিনি বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার সম্পর্কে সমাজের সর্বস্তরের জনসাধারণকে অবহিত করা এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করে মাদকের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করাই এই দিবস উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স রয়েছে। মাদক কারবারীদের কোন রক্ষা নাই। যেখানেই মাদক পাওয়া যাবে সেখানেই তাদের মূল উৎপাটন করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ ইমতিয়াজ। তিনি বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার এর বিরুদ্ধে সকল জাতি ও রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগিয়ে আসতে হবে এবং মানুষকে সচেতন করার আহŸানের মধ্য দিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
বিজিবির উপ-অধিনায়ক মো: হাবিব বলেন, প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে যথেষ্ট আন্তরিক রয়েছে। সকলের সঠিক তথ্যের মাধ্যমে আমরা মাদক বিক্রেতাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ কে এম শাহরিয়ার রেজা বলেন, মাদকের কড়াল গ্রাসে যুব সমাজ আজ বিপথগামী হয়ে পড়ছে। এই যুব সমাজকে রক্ষা করতে মাদকের বিরুদ্ধে গণ জোয়ার সৃষ্টি করে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
আরও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ কারাগারের জেল সুপার সুভাষ চন্দ্র, এনজিওদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান এস এম আরিফ মিহির ও শহর সমাজসেবা প্রকল্প সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মোঃ সামসুজ্জামান ভাষানী।
আলোচনা সভা শেষ করে মাদকবিরোধী রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান করা হয়। রচনা প্রতিযোগিতায় চার জন ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় দশ জনকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে পুরস্কৃত করা হয়। মাদকবিরোধী গণসচেতনতা কার্যক্রমে সর্বিক মূল্যায়নে নারায়ণগঞ্জের সফল ও শ্রেষ্ঠ সংগঠন অর্জনকারী মানব কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান ভূঁইয়াকে শ্রেষ্ঠ সংগঠকের সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
আলোচনা পূর্বে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশ সুপার কার্যালয় হয়ে লিংক রোড প্রদক্ষিণ করে মাদক বিরোধী গণসচেতনতা মূলক একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয় সকাল ১০ টায়। র্যালিতে জেলা প্রশাসক ছাড়াও ট্রাফিকের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, জেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক জেলা শিক্ষা অফিসার শরিফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা বারিক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর ওবায়দুল কাদের সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।