নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : ভোটার বিবেচনায় নয় প্রকৃত অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রীর প্যাকেট বিতরন করার জন্য আবারো ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বার সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের প্রতি অনুরোধ রেখেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
তিনি বলেছেন, সত্যিকার ভাবে যারা দরিদ্র অসহায় তাদের হাতেই যেন ঈদ সামগ্রীর প্যাকেট পৌছে দেওয়া হয়। যাতে করে অন্য সকলের মত তাঁরাও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের দিনটা হাসি আনন্দে উৎযাপন করতে পারে। কোন অবস্থায় দলীয় লোক কিংবা ভোটার বিবেচনা করে প্যাকেট বিতরন করলে আপনারা গুনাহর কাজ করবেন।
মঙ্গলবার ৫ জুন দুপুর দেড়টায় ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুরে অবস্থিত এমপি সেলিম ওসমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উইজডম অ্যাটায়ার্সের সভাকক্ষে তাঁর নির্বাচনী এলাকার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার এবং জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, প্রতিটি ইউনিয়ন এলাকায় ৩ হাজার করে ঈদ সামগ্রীর প্যাকেট দেওয়া হবে। যার মধ্যে প্রতি ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য সহ মোট ১২জন জনপ্রতিনিধির প্রত্যেকে ২০০টি করে প্যাকেটর স্লিপ পাবেন। আর প্রত্যেক চেয়ারম্যানরা পাবেন ৬০০টি করে স্লিপ। সেই সাথে জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দরা সদর এলাকায় ১৫০০ প্যাকেট এবং বন্দর থানা এলাকায় ১৫০০ প্যাকেট ঈদ সামগ্রী পাবেন। আপনাদের এলাকায় নেতৃত্ব দেওয়া সকল দলের নেতা এবং নির্বাচনে আপনাদের সাথে যারা প্রতিদ্বদ্ধীতা করেছেন তাদের সবাইকে নিয়ে একত্রে প্যাকেট গুলো বিতরন করবেন। আর স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দরা আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগীতা করবেন। এক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে করে একজন ব্যক্তি একাধিক স্লিপ না পায়। এতে করে অন্যরা বঞ্চিত হবে।
জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্না, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক আফজাল হোসেন, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন, মহানগর শ্রমিক পার্টির আহবায়ক আবুল খায়ের ভূইয়া, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জাপা নেতা শফিউদ্দিন প্রধান, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি বাচ্চু মিয়া, ১৭নং ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, ১৯নং ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সভাপতি পলি বেগম, বন্দর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি সাহাবুদ্দিন সাবা, জাপা নেতা রোটিয়ান গিয়াসউদ্দিন, মদনপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি খায়রুল রাশার, জেলা যুবসংহতির আহবায়ক রাজা হোসেন রাজু, জেলা যুবসংহতি নেতা কামাল হোসেন, আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, গোগনগর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি মোক্তার হোসেন সুকুম, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ সহ ৭ ইউনিয়ন পরিষদের সকল ওয়ার্ডের মেম্বার ও জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা।
প্রসঙ্গত, অসহায় দরিদ্র পরিবার গুলোতে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে প্রতিবারের মত এ বছরেও নারায়ণগঞ্জের অসহায় পরিবার গুলোর হাতে ঈদ সামগ্রীর প্যাকেট তুলে দিবেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তাঁর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মোট ৪৫হাজার প্যাকেট ঈদ সামগ্রী বিতরন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে ২২ হাজার ৫০০ প্যাকেটে ১টি করে শাড়ি অবশিষ্ট প্যাকেটে ১টি করে লুঙ্গি, প্রত্যেক প্যাকেটে ১ কেজি পোলাও চাল, ১কেজি চিনি, ৫০০ গ্রাম গুড়ো দুধ, ৪০০ গ্রাম সেমাই, ১লিটার সয়াবিন তেল।
পাশাপাশি অসহায় পরিবার গুলোতে থাকা ২০ থেকে ২৫ হাজার শিশুর হাতে ঈদে নতুন পোশাক তুলে দেওয়ার জন্য নারায়ণগঞ্জের ৮টি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের প্রতি আহবান রেখেছেন তিনি। তাঁর আহবানে সাড়া দিয়ে শিশুদের হাতে নতুন পোশাক তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠন গুলোর নেতৃবৃন্দরা। সেই সাথে শিশুদের হাতে নতুন পোশাক তুলে দিতে বিকেএমইএ সভাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া ঘোষনা দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৪-২০১৭ সাল পর্যন্ত গত ৪ বছরে মোট ১লাখ ১৬ হাজার প্যাকেট ঈদ সামগ্রী বিতরন করেছেন এমপি সেলিম ওসমান। যার মধ্যে ২০১৪ সালে ২০ হাজার প্যাকেট, ২০১৫ সালে ২৬হাজার প্যাকেট, ২০১৬সালে ব্যক্তিগত তহবিল ও ব্যবসায়ীদের সহযোগীতায় ৫৬হাজার প্যাকেট, ২০১৭সালে ২০হাজার প্যাকেট ঈদ সামগ্রী বিতরন করা হয়েছে। যার মধ্যে ছিল একটি শাড়ী, ১ কেজি ফ্রেস চিনি, ২৫০ গ্রাম ফ্রেস গুড়া দুধ, ১ লিটার ফ্রেস সয়াবিন তেল, ১ কেজি ফ্রেস আটা, ১ কেজি প্রাণ চিনিগুড়া চাল, ৪০০ গ্রাম চিকন সেমাই ছিল।