নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিনিধি ) : শহরের জামতলা এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ৭তলা ভবন থেকে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ভবনের জমির মালিক শহরের মদ ব্যবসার ডিলার দর্পনের এর পরিবার। ভবনটির ঠিকাদার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাসাদ নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা হীরু আলী মীর। মর্মান্তিক এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে যাওয়া এস.আই এস.এম শামীম । তবে সচেতন মহলের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে লকডাউনের মধ্যেও কিভাবে ভবন নির্মাণ কাজ চালু রয়েছে।
যেখানে জরুরী সেবা ছাড়া সর্বত্রই কঠোর লকডাউনের আওতায় রয়েছে। তাছাড়া সরকারের বিধিনিষেধ মানাতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এদিকে নগরীর বিভিন্নস্পটে চেকপোস্ট বসিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন থেকে শুরু করে যাচাই করা হচ্ছে মোটর সাইকেল আরোহীর হেলম্যাটও। কিন্তু এরমধ্যেই কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে চলছে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ভবন নির্মাণ কাজ।
জানা গেছে, গত ৭ই জুলাই বুধবার রাতে জামতলা মসজিদ গলিতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নির্মাণ শ্রমিক হলো চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিমুলতলা জাদিপুর এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে আব্দুর রহিম (৪০)। ঘটনার সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে নির্মাণাধীন ভবনের ভিতরের ভয়েট (দু-তিন ফুট ফাঁকা জায়গা) থেকে নিচে পড়ে যায়। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ঘটনাস্থলে গেলে জানা যায়, গতকাল দুপুরেই মালিক পক্ষ, ঠিকাদার ও বিশেষ পেশার লোকদের নিয়ে নির্মাণাধীন ভবনটিতে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওইসময় নিহত শ্রমিকের স্ত্রী ও স্বজনদেরকে লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। তাছাড়া নগদ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি রফাদফা করে ঠিকাদার হিরো। পরবর্তিতে চাপের মুখে নিহতের পরিবার ফতুল্লা থানায় অসাবধানতাবসত এ ঘটনা ঘটেছে বলে একটি লিখিত দেয়ার মাধ্যমে অপমৃত্যু দায়ের হয়।
তবে লকডাউনে নির্মাণ কাজ চলায় স্থানীয় কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, যারাই এসব ভবনের কাজ করাচ্ছেন, তারা কি লকডাউনের আওতার বাহিরে রয়েছে ? তাদের ভবনের সামনেতো সময়মত ইট, বালু ও রড ট্রাকে আসছে। প্রতিদিনের মত স্বাভাবিকভাবেই নির্মাণ কাজও চলছে। লকডাউন নিয়ে প্রশ্ন উঠিয়ে জামতলা এলাকারই এক বাসিন্দা বলেন, আদৌ কি লকডাউন মানা হচ্ছে। ট্রাক বা নিষেধাজ্ঞা থ্রি-হুইলারে করে সিমেন্টের বস্তাগুলোতো সড়ক দিয়েইতো আসে। প্রশাসনের এমন নজরদারীতে কিভাবে সম্ভব হচ্ছে। আর এমন কাজ করতে গিয়েই অসাবধানতা থাকাতেই প্রাণ হারায় নিরিহ নির্মাণ শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার এস.আই এস.এম শামীম জানান, জমির মালিক ইসমত আলী। তিনি রিপন নামে এক ডেভেলপারের নিকট দিয়েছে। রিপন আবার তা লায়েক ও স্থানীয় ঠিকাদার হিরু আলী মিরকে ভবনটি নির্মাণের জন্য চুক্তিতে দেয়। তাদের হয়ে কাজ করতো নিহত আব্দুর রহিম। লকডাউনে কাজ চলমানের বিষয়ে জানতে চাইলে মালিকের বরাত দিয়ে তিনি জানান, ওইখানে আপাতত ৭-৮ জন শ্রমিক রড, ইটগুলো সরানোর কাজ করতো। অন্যান্য কাজ বন্ধ রয়েছে বলে দাবি করেছেন মালিকপক্ষ। এছাড়া অন্যান্য বিষয়ে তারা যদি গোপন করে থাকে তা জানা নাই।
অন্যদিকে স্থানীয়রা জানায়, ওই ভবনটিতে নির্মাণ কাজ চলছিল। যা মদ ব্যবসায়ী ডিলার দর্পন এর পরিবার মালিক। তাছাড়া ওই ভবনটিতে ছাদ ঢালাইয়ের জন্য সেন্টারিংয়ের কাঠ বসানোর কাজ চলছে।