নারায়নগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ফতুল্লা সংবাদদাতা ) : ফতুল্লা আবির ফ্যাশন এর মালিক মোস্তফিজুর রহমান শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন না দিয়ে গার্ন্টসে তালা ঝুালিয়ে বন্দরে বোনের বাসায় পালিয়েছিলো ।
শুক্রবার বিক্ষব্ধ শ্রমিকরা তাকে আটক করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
শ্রমিকদের দাবি, ৪জুন সকাল ১১টার মধ্যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছিলো পুলিশ।ওই আশাতেই শ্রমিকরা ফতুল্লা মডেল থানার কাছে এসে ভিড় জমান বন্ধ হয়ে যাওয়া আরবি ফ্যাশনের দেড়শ শ্রমিক। কিন্তু দুপুর গিয়ে বিকাল হয়ে আসছে শ্রমিকরা বেতন হাতে পায়নি। এতেই বিক্সোব্ধ হয়ে উঠেন অপেক্ষায় থাকা শ্রমিকরা। তাঁরা ফতুল্লা থানার ভেতর প্রবেশ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। পুলিশ এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে থানার গেটের বাইরে নিয়ে আসেন।
দুপুর দুইটার দিকে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের শ্রমিকদের আশ্বাস দেন বিকেলের মধ্যে তাঁদের বেতন পরিশোধ করবে মালিক পক্ষ।এই আশ্বাসে শ্রমিকরা শান্ত হয়।
এসম শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, বিকেলের মধ্যে যদি মালিক পক্ষ তাঁদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে তাহলে তাঁরা থানার সামনেই আত্মহত্যা করবে। এমন দাবিতে শ্রমিকেরা থানার কাছেই অবস্থান নিয়েছেন।
শ্রমিকদের মধ্যে একজন বলেন, আত্মহত্যা না করে কি আর করবো। এ ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। তিন মাসের বেতন বকেয়া থাকার কারণে মানবেতর জীবন যাপন করছি আমরা। খেয়ে না খেয়ে আছি। বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়েছে। দোকান বাকিও জমা পড়েছে অনেক। এসব পরিশোধ করতে না পারলে মরা ছাড়া আর কোনো গতি নেই।
শ্রমিক সূত্রে জানা গেছে, ফতুল্লা মডেল থানা সংলগ্ন আরবি ফ্যাশনে প্রায় দেড়শ শ্রমিক কাজ করেন। গত তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে তাঁদের। এমন পরিস্থিতিতে গত মাসে ফ্যাক্টরী মালিক মুস্তাফিজুর রহমান কাউকে কিছু না জানিয়ে গার্মেন্টে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। পরে শ্রমিকেরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সে বন্দর উপজেলায় তাঁর বোনের বাড়িতে পালিয়ে আছেন।
তাঁরা জানান, বন্দর থেকে মোস্তাফিজুর রহমানকে ধরে এনে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের কাছে শুক্রবার সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশের কাছে মোস্তাফিজুর রহমান জানান সোমবার (৪ জুন) শ্রমিকদের বেতন তিনি পরিশোধ করবেন। সেদিন থেকে মোস্তাফিজ পুলিশের হেফাজতেই আছেন।
এ প্রসঙ্গে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের বলেন, আরবি ফ্যাশনটি তিনজন মালিকের অংশিধারিত্ব। এর মধ্যে গত কিছুদিন আগে তাঁরা ফ্যাক্টরী বন্ধ করে পালিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে শ্রমিকদের সহযোগিতায় মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক পার্টনারকে আটক করেছি।
তিনি জানান, বিকেলের মধ্যে মালিক পক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার আশ্বাস দিয়েছে। শ্রমিকেরাও বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এখন মালিক শ্রমিকদের টাকা দিবে কোথা থেকে সে তাঁর ব্যাপার। বিকেলের মধ্যে শ্রমিকদের টাকা তাঁকে দিতেই হবে।
শ্রমিকদের আত্মহত্যার আল্টিমেটাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মঞ্জুর কাদের এর সত্যতা স্বীকার করেন।