পিপির পুত্র আকিবকে বান্ধবীসহ মদপান অবস্থায় উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াজেদ আলী খোকনের পুত্র আকিব সাদাতকে বান্ধবীসহ মদপান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ১লা এপিল সোমবার দিবাগত রাতে চাষাড়া বালুর মাঠ নিজ বাসভবন থেকে সদর থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

ওয়াজেদ আলী খোকনের পুত্র আকিব সাদাতকে  রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দুই বন্ধু মিলে এক বান্ধবীকে নিয়ে মদপানকালে ঝগড়ার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। পিপির পুত্রের বান্ধবী ও এক বন্ধুকে আটক করেন পুলিশ এবং আহত পিপির পুত্র আকিব সাদাতকে (২০) চিকিৎসার জন্য নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হয়।

আটককৃত দুইজনের একজন আকিবের বন্ধু ইয়ামিন (২০)। সে নগরীর খানপুর এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেন পোকনের ছেলে। অপর জন তাদের বান্ধবী সায়মা (২০)। সে বালুমাঠ এলাকার বিশিষ্ট সূতা ব্যবসায়ী বাদশার ছোট ভাই আবদুর রবের মেয়ে।

আটককৃত ইয়ামিন জানায়, পিপি ওয়াজেদ আলী খোকনের নিজ বাসভবন বালুর মাঠ এলাকায়। সে বাসার চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে আকিব, বন্ধু ইয়ামিন ও বান্ধবী সায়মা প্রায়ই মদ পান করে। ঘটনার দিনও তারা মদ পান করে। মদ পানের এক পর্যায়ে আকিবের হাত কেটে গেলে ঘটনার সৃষ্টি হয়।

অপরদিকে এলাকাবাসী জানান, পিপির বাড়ির চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে তুমুল হট্টগোলের শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা ওয়াজেদ আলী খোকনকে অবহিত করে। এমন হট্টগোলের নেপথ্যে কি ঘটছে তা জানতে ওয়াজেদ আলী খোকন চতুর্থ তলায় ছুটে যান। অনেক চেষ্টা করেও দরজা খুলতে ব্যর্থ হয়ে সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ দীর্ঘ চেষ্টার পর ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে আকিব সাদত, বন্ধু ইয়ামিন ও তাদের বান্ধবী সায়মাকে উদ্ধার করলেও পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন তার পুত্রকে খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান।

খবর পেয়ে সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীলসহ অনেকেই হাসপাতালে ছুটে আসেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ডা: জাহাঙ্গির আলমও মধ্যরাতে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এসে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান মদ্যপানে অসুস্থ আকিব সাদতকে।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সারোয়ার হোসেন বলেন, আকিব সাদত গুরুতর আহত নয়। তার হাত সামান্য কেঁটে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে মদ পানের পর কোনো কাচ জাতীয় কিছুতে আঘাত পেয়েছে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের নির্দেশে মদ্যপান করা ইয়ামিনকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়।

সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা ইমনের কাছে ইয়ামিন স্বীকার করে, সে ও আকিব এবং বান্দবী সায়মা বিদেশী মদের সাথে কোক মিশিয়ে পান করেছে।

এ  সময় ইয়ামিন অপকপটেই জানায়, তারা প্রায় প্রতিদিন ওয়াজেদ আলী খোকনের বাড়িতে মদ্যপানের আসরে মিলিত হয়।

ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের কয়েকজন সদস্য জানান, মদ ও নারী কেলেংকারীর ঘটানায় পিপির বাড়িতে এমন লঙ্কাকাণ্ড দেখে আমরা হতবাক। যে দৃশ্য আমরা দেখেছি তা ভাষায় প্রকাশ করাও যায় না।

ঘটনার বিষয়ে উপ-পরিদর্শক সাব্বির খান বলেন, মধ্যরাতে পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন আটককৃতদের ছাড়াতে এসেছিলেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়ে দেয়ায় তিনি ফিরে গেছেন।

এ ব্যাপারে পিপি ওয়াজে আলী খোকন বলেন, আমি বিস্তারিত কিছু জানি না। আমার ছেলে সুস্থ হলে সব জানতে পারবো।

নারায়ণগঞ্জ সদর থানার দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। তাই যাচাই বাছাই করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের কিছু সময় লাগবে। আমরা দুই জনকে আটক করেছি।

add-content

আরও খবর

পঠিত