নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের বিভিন্ন খাতে আয় করা প্রায় ৭৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা পরিষদকে নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ অধিশাখা। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুব্রত পাল ।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের জমি লিজ, ঘাট ইজারা, ডাকবাংলোর ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতের মোট ৭৮ লাখ ৪ হাজার ১৩০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন রেজাউল করিম। তবে অভিযুক্ত রেজাউল করিম আত্মসাৎকৃত ৭৮ লাখ টাকা দফায় দফায় পরিশোধ করছেন বলেও জানা যায়।
এ সকল অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে গত ১৮ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ড. জুলিয়া মঈন এক অফিস আদেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে আত্মসাৎকৃত টাকা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত নির্দেশনা প্রদান করা হয় ।
জেলা পরিষদের একাধিক সূত্র জানায়, ১৭ বছরের সরকারি চাকরি জীবনের পুরো সময়ই নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদে ছিলেন রেজাউল করিম। প্রভাবশালী চক্রের সঙ্গে তার সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলার সাহস করতেন না। জানা যায়, কেবল সরকারি অর্থ আত্মসাতেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না রেজাউল করিম।
এমনকি চাকরিতে প্রবেশের জন্যও আশ্রয় নেয় প্রতারণার। ২০০১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদে উচ্চমান সহকারী পদে যোগদান করেন চাঁদপুর জেলার মতলব থানার চরলক্ষীপুর গ্রামের আবু বকর সিদ্দীকের ছেলে রেজাউল করিম। যোগদানের ২৪ দিনের মাথায় বদলি হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদে যোগদান করেন।
পরে চাকরির ১৭ বছর পর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে রেজাউল করিমের সার্টিফিকেট জমা না দিয়ে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি। জাল সার্টিফিকেটে মুন্সিগঞ্জ জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী পদে যোগদান করা ও সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৭ সালের দুদকের এক মামলায় কারাগারেও গিয়েছিলেন তিনি।
এ সকল তথ্য নিশ্চিত করে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুব্রত পাল জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র তৈরি করা হচ্ছে এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সে আত্মসাৎকৃত ৭৮ লাখ টাকা তিনি দফায় দফায় ফেরত দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ২০ লাখ টাকার মতো ফেরত দিয়েছেন। তবে টাকা ফেরত দিতে থাকলেও আইন অনুযায়ী শাস্তি ভোগ করবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।