নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব সংবাদ দাতা ) : নারী পুলিশ কনস্টেবলের (২৪) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক জড়িয়ে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে হৃদয় খান (২৫) নামে এক যুবককে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। হৃদয় খানকে আদালতে তুলে পুলিশ ৬ দিনের রিমান্ড চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূরুননাহার ইয়াসমিন এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৪ঠা জুন শুক্রবার হৃদয় খানকে আদালতে উঠানো হলে ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর দেন আদালত।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া হৃদয় খানকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে উঠালে বিজ্ঞ বিচারক জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ১ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। গত ৩ই জুন বৃহস্পতিবার রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ওই নারী পুলিশ সদস্য।
মামলার এজহারে বলা হয়েছে, ওই নারী পুলিশ সদস্য নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন চাঁনমারী এলাকার বাসিন্দা। তিনি কক্সবাজার জেলা পুলিশ লাইনসে এসএএফ শাখায় কনস্টেবল পদে কর্মরত আছেন। অভিযুক্ত যুবকের ব্যাপারে বলা হয়, হৃদয় খানের বাড়ী ঢাকার মগবাজার এলাকায়। হৃদয় ওই নারীর আত্মীয় এবং তাদের মধ্যে দুই বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক হয়। সেই সুবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটস এ্যাপে হৃদয়ের সাথে ভিডিও কলে তার নিয়মিত যোগাযোগ হতো। হৃদয় খান তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার সাথে বিভিন্ন কথোপকথন ও আপত্তিকর নানান অশ্লীল ভিডিও আদান-প্রদান করে, যা হৃদয় তার মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করে রাখে।
মামলার এজহারে ওই নারী পুলিশ সদস্য আরও অভিযোগ করেন, হৃদয় তার অজান্তে তার সাথে কাটানো একান্ত অন্তরঙ্গ সময়ের কিছু ঘনিষ্ট মুহুর্তের ভিডিও ধারণ করেছিল। পরে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়ন শুরু হলে হৃদয় তার ব্যক্তিগত জি-মেইল এর নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়। সেখান থেকে মোবাইল ফোনের যাবতীয় নম্বর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের তথ্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে হৃদয় কৌশলে বিভিন্ন পুলিশ সদস্যদের মোবাইল নম্বর দিয়ে হোয়াটস এ্যাপ বিডি পুলিশ নামে একটি গ্রুপ খুলে সেখানে ওইসব আপত্তিকর ভিডিও এমন ছবি আপলোড দিলে তা ভাইরাল হয়। এতে সামাজিকভাবে ও কর্মস্থলে মান সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে বলে ওই নারী পুলিশ সদস্য দাবি করেন।
মামলার এজাহারে এ বিষয়ে ওই নারী পুলিশ সদস্য আরও উল্লেখ করেন, গত ২রা জুন বুধবার ছুটি পেয়ে কক্সবাজার থেকে তিনি নারায়ণগঞ্জের বাড়িতে আসেন। ৩ই জুন বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় হোয়াটস এ্যাপ চালু করে দেখেন বিডি পুলিশ নামে হোয়াটস এ্যাপ গ্রুপে হৃদয় তাদের গোপন অশ্লীল আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে। পরে তিনি পরিবারের সদস্য ও কর্মস্থলের উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা করে থানায় গিয়ে আইনের সহায়তা চান।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর ফখরুদ্দীন ভূঁইয়া জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলার পরপরই পুলিশি অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোররাতে জেলার সাইনবোর্ড এলাকা থেকে হৃদয় খানকে গ্রেফতার করা হয়।