নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : ভারতের চেন্নাই ফেরত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এক ব্যক্তির শরীরের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তির বাড়ি স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে লকডাউন করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। আজ ১২ই মে বুধবার ওই বাড়ির প্রতিটি লোককে আইসোলেশনে রেখেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রয়োজনে যে কোন সময় তাদেরকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হতে পারে। ওই ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার জন্য গাজী ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে তিনি ভারতের চেন্নাইতে কাজ করতেন। সেখানে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তিনি ভয়ে বর্ডার পার হয়ে ৯ মে দেশে আসেন। প্রথমে তিনি বিমানে আখাউড়া পর্যন্ত আসেন, সেখান থেকে বর্ডার ক্রস করেন। ১০ মে থেকে তাকে নজরদারিতে রাখা হয়। ১১ মে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং ১২ মে তার দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকে ওই ব্যক্তি আলাদা রুমে অবস্থান করছেন এবং তাঁর সঙ্গে বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, ভাবি, ভাতিজা-ভাতিজা এক বাড়িতে রয়েছেন। এদিকে সকালেই উপজেলা প্রশাসন ও রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ওই ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করে দেন।
এ বিষয়ে জেলা করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভারত থেকে ফেরত ওই ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাঁকে বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। পুরো বাড়ি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, যেহেতু ওই ব্যক্তি ভারত থেকে এসেছেন, তাই তাঁর ও তাঁর বাড়ির লোকজনের সবার নমুনা পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে তাঁর করোনা শনাক্ত হয়।
তিনি আরো বলেন, ভারত থেকে আসা ওই ব্যক্তির করোনার ধরন ভারতীয় প্রকৃতির কি না, তা যাচাই করতে ইতিমধ্যে আইইডিসিআরকে অবহিত করা হয়েছে। আমাদের ধারণা, ওই করোনাভাইরাস ভারতীয় প্রকৃতির হতে পারে। তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ব্যক্তি চার বছর ধরে ভারতের চেন্নাইয়ে কাজ করেন। সেখানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হলে ভয়ে ৮ মে আখাউড়া সীমান্তে আসেন। পরে আখাউড়া সীমান্ত পার হয়ে ওই ব্যক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বরপা তারাবো এলাকায় বাড়িতে পৌঁছান। ৯ মে থেকে তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। পরদিন ১০ মে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানালে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে নমুনা পরীক্ষা এবং ওই বাড়ির সবাইকে কোয়ারেন্টিনে রাখেন। তাঁর কোনো উপসর্গ নেই।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, চেন্নাই ফেরত ওই ব্যক্তির বাড়ি লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। ওই বাড়ির লোকজনকে টেলিমেডিসিন সেবাসহ ও খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর নমুনায় ভারতীয় ধরনের মিল রয়েছে কি না, সেটি পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।