নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্ট ) : তাবলীগের দুই পক্ষের বিপরীতমুখী দৃঢ় অবস্থান ও উত্তেজনার কারণে জানুয়ারি মাসে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। তবে ফেব্রুয়ারিতে সুবিধাজনক সময়ে তা অনুষ্ঠিত হবে। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক)-এর মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তাবলিগ সূত্র জানায়, ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাবলীগের দুইপক্ষের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সুষ্ঠুভাবে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের লক্ষ্যে তাবলীগের মুরব্বীদের বৈঠকে ঢাকা হলেও একসঙ্গে উভয়পক্ষকে বসানো সম্ভব হয়নি। হেফাজতপন্থী মাওলানা জুবায়ের ও তার সমর্থকরা মাওলানা সাদের অনুসারীদের সঙ্গে বসতে আপত্তি জানান। তাই আলাদাভাবেই বৈঠক করতে হয়।
তাবলিগ জামাত সূত্র জানায়, মাওলানা সাদ বিষয়ে দারুল উলুম দেওবন্দের মতামত জানতে আগামী ১৫ জানুয়ারি উভয়পক্ষের মুরব্বী ও আলেমদের একটি প্রতিনিধিদল ভারত যাবে। দেওবন্দ থেকে ওই প্রতিনিধি দল আসার পর ফেব্রুয়ারির সুবিধামতো সময়ে ইজতেমার তারিখ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক)-এর মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস বলেন, জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে না। তবে বিশ্ব ইজতেমা এ বছর হবেই।
বৈঠকে চারটি সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা যায়,
১। জানুয়ারিতে কোনো পক্ষের কোন ইজতেমা হবে না।
২। ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল দেওবন্দ গিয়ে রিপোর্ট নিয়ে আসার পর ইজতেমার তারিখ নির্ধারিত হবে।
৩। কোনো মসজিদে তাবলীগের কাজে কোন বাধা কেউ দিতে পারবে না।
৪। নতুন ইজতেমার তারিখ পর্যন্ত উভয় পক্ষ কোন জোড়, ইজতেমা, সমাবেশ, পরামর্শ সভা, অথবা ওয়াজাহাতি জোড় করতে পারবে না।
২০১৮ সালের বিশ্ব ইজতেমার পর তাবলিগ জামাতের দুইপক্ষ আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঘোষণা করে। নিজামুদ্দীন মার্কাজপন্থী মাওলানা সাদের অনূসারীরা ১১, ১২, ও ১৩ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করেন। এর বিরোধিতা করে জানুয়ারির ১৮, ১৯ ও ২০ ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করে হেফাজতপন্থী মাওলানা জুবায়ের অনূসারীরা।
এ নিয়ে সারা বছরই উত্তেজনা থাকে। গত ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। তাবলিগের নিজামুদ্দীনপন্থী শুরা সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের পর ইজতেমার মত বড় আয়োজন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিমশিম খেয়ে যাবে, তাই সরকারের পক্ষ থেকে ইজতেমা পেছানোর অনুরোধ করা হয়েছে। দেওবন্দ থেকে প্রতিনিধি দল আসার পর ফেব্রুয়ারিতে সুবিধামত সময়ে ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
ইজতেমা কি একসঙ্গে হবে না আলাদা এ প্রসঙ্গে সাদপন্থী সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম বলেন, যদি সম্ভব হয় তাহলে একসঙ্গেই করার চেষ্টা করছে সরকার, না হলে তো আলাদাই করতে হবে। কিন্তু তারা তো আমাদের সঙ্গে বসতেই আগ্রহী নয়।