নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : মাকে জোড় করে বাথরুমে নিয়ে যায় বাবা, রনি ভাইয়া ও মীমের মা। পরে আমি বাথরুমে গিয়ে দেখি ভাইয়া ও আন্টি মাকে ধরে রেখেছে ও বাবা বটি দিয়ে মার গলা কেটে দিচ্ছে। মা মরে যায়। এরপর বাবা আমাকে মুখে আঙ্গুল রেখে বলে-চুপ কর কথা বলবি না। এভাবেই মা জান্নাতুল ফেরদৌস উর্মি হত্যার দৃশ্য বর্ণনা করলো তার ৭ বছরের শিশু অনিম। এভাবেই চোখের সামনে নিজের মাকে হত্যা করার দৃশ্য দেথে শিশু অনিম।
রবিবার (৫ মে) দুপুরের দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই কথা জানায় অনিম। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলো তার নানা মো. খোকন এবং নানী নূর আক্তার। তারা নারায়ণগঞ্জ শহরের ১৫৩ নম্বর খানপুর মেইন রোড এলাকার বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের মা নূর আক্তার দাবি করেন, তার মেয়ের হত্যাকারি আজগর আলী জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে প্রার্থনা করলেও তা না মঞ্জুর করে দেন আদালত। কিন্তু আজগর আলী কৌশল অবলম্বন করে নিম্ন আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসে। বর্তমানে আমরা আমাদের নাতি অনিমের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো দাবি করেন, তিনি দীর্ঘদিন কুয়েত প্রবাসী ছিলেন। সেখানে তিনি গৃহপরিচারিকার কাজ করে তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস উর্মিকে বিএ অনার্সে ভর্তি করান। এরমধ্যে ঢাকার সুরিটোলা এলাকার মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে আজগর আলীর সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। তাদের ঘরে অনিম নামে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। সে বর্তমানে আমাদের হেফাজতে রয়েছে।
প্রধান বিচারপতির বরাবর আজগর আলীর জামিন আদেশ বাতিল করার আবেদন জানানো হয়েছে জানিয়ে নূর আক্তার বলেন, চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল আজগর আলীকে হাইকোর্ট বিভাগ জামিন প্রদান করলেও তা আবার আপিল বিভাগ বাতিল করে দেন। এর আগেও বেশ কয়েকবার হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলেও তা না মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু এরপর কৌশল অবলম্বন এবং তথ্য গোপন করে নিন্ম আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসে ঘাতক খোকন।
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলে এ সময় বলেন, মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের বাতিলকৃত জামিন আদেশ থাকা সত্ত্বেও এবং হাইকোট বিভাগে রুল পেন্ডিং থাকা সত্ত্বেমহানগর দায়রা জর্জ আদালত আমার মেয়ে হত্যার মূল আসামী আজগর আলীকে কীভাবে জামিন দিল?
সংবাদ সম্মেলনের শেষে নূর আক্তার বলেন, আমি আমার মেয়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই আমি। যারা এ হত্যার সাথে জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্যে আমি বিচার বিভাগের কাছে প্রার্থণা করছি।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৬ সালে ৫ নভেম্বরে ঢাকার সুরিটোলার একটি তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে নির্মম ওই হত্যাকান্ডটি ঘট সংঘটিত হয়। এ ঘটনায় একই বছরের ৬ নভেম্বর ঢাকার বংশাল থানায় মেয়ের জামাই আজগর আলী এবং ভাগিনা রনির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো তিন চারজনকে আসামী করে মামলা করেন নিহত উর্মির পিতা মো. খোকন।