নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুরে দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে এক ব্যবসায়ীর ভাই সহ ৬জনকে আহত করা হয়েছে। মঙ্গলবার ( ২০ আগস্ট ) সকাল সাড়ে ১০টায় চর সৈয়দপুর এলাকাস্থ ক্রাউন সিমেন্ট কোম্পানির সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আর বাকি আহতরা নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত মামলা প্রক্রিয়াধিন রয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, ক্রাউন সিমেন্ট কোম্পানির সাথে দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর যাবৎ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে সৈয়দপুর এলাকার হাজী আব্দুস সাত্তার এর বড় ছেলে মো. মাসুম। মঙ্গলবার সকালে মাসুম সহ আহতরা সিমেন্ট কোম্পানিতে ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে গেলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা নারায়ণগঞ্জ- মুন্সিগঞ্জের চিহ্নিত সন্ত্রাসী খোকন মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র, লাঠি ও লোহার পাইপ দ্বারা অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় সৈয়দপুর এলাকার মো. জুম্মন (৩০), মো. নয়ন (২৭) এবং মামুন (৩০) গুরুতর রক্তাক্ত জখম সহ ৬/৭ জন আহত হয়। এদের মধ্যে মো. জুম্মন এবং মো. নয়নের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছে তার স্বজনরা।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী মো. মাসুম জানায়, প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা দিয়েও খোকন মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের নানাভাবে চাঁদার জন্য হুমকি প্রদান করে। আমরা এদের যন্ত্রনায় ব্যবসা করতে পারছিনা। বিভিন্ন সময় নানা অযুহাতে তারা চাঁদা নিয়ে যায়। এরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী রহিম বাদশা, আবুল, শাহিন, বাবুল, আনিছ, অপু, রফিকুল, খোরশেদ, ফয়সাল, ফারুক, দিপু, পারভেজ, সালাম, সানি, আলতাফ, জুয়েল, রাজিব সহ ২০ থেকে ২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। যা নিয়ন্ত্রণ করে খোকন মেম্বার।
ঘটনার বিবরনে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীক বিষয় নিয়ে আমি যখন কোম্পানীর কনফারেন্স রুমে ছিলাম। ওই সময় আমার ছোট ভাই ও আমার ব্যবসায়ীক সহযোগীরা একটি দোকানে চা খাচ্ছিল। অল্পের জন্য আমি রক্ষা পেলেও ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পিছন থেকে আমার লোকের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আমি এখানে ব্যবসা করতে এসছি, মারামারি করতে না। র্দীঘ আট বছর যাবৎ শান্তিপূর্ণভাবে সবকিছু মেনে ব্যবসা করছি। কিন্তু তাদেও চাঁদাবাজীর কারণে আমি অতিষ্ট। আমি এই চিহ্নিত চাঁদাবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এদিকে বিকালে ঘটনাস্থলে পরির্দশন করেন সদর থানার পুলিশ। তবে ওই সময় অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতিতেই উত্তেজিত হয়ে উঠে। এরপর পুলিশ কয়েকজনকে তদন্তে স্বার্থে জিজ্ঞাসবাদ করলে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা তেড়ে আসে। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসা সদর থানা পুলিশের এসআই রিপন সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা স্থান পরিত্যাগ করে চলে যায়।
উল্লেখ্যে, নারায়ণগঞ্জের জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ যেখানে পুরো জেলাকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই অঞ্চলে প্রকাশ্যে দিবালোকে চাঁদার দাবীকৃত টাকার জন্য সন্ত্রাসী বাহিনীর এমন হামলায় আতংকিত সেখানকার বাসিন্দারা। অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্তদের অনেকেই রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় মাদক সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে থাকে। দ্রুত এর লাঘাম টেনে না ধরলে যেকোন সময় এখানে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ সহ নিহতের ঘটনা হতে পাওে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।