নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টার ) : দেওভোগের আদর্শনগর এলাকায় নির্র্মাণাধীণ ভবনের ক্রেন ছিড়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় মেম্বার সহ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিহত ৫ বছরের শিশু রাকিব এর পরিবারকে ৫ লাখ টাকার আশ্বাস দিয়ে মাত্র ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে মধ্যস্থকারীরা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ সঞ্চার হয়েছে।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জে ভবন তোলার ক্ষেত্রে ইমারত নির্মাণ আইন মানা হয় না। এতে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটে। আর এমন ঘটনা ঘটলেই একশ্রেনীর লোক মধ্যস্থতাকারী সেজে টু-পাইস কামিয়ে নেয়। এসব ঘটনা জেনেও রহস্যজনক কারণে চুপ থাকেন কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফতুল্লা থানাধীন পশ্চিম দেওভোগের আদর্শনগর এলাকায় রিপন দপ্তরীর একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাইলিংয়ের ক্রেনের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয় রাকিব। রাকিব একই এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক জাহিদুল ইসলামের একমাত্র ছেলে।
এলাকা সূত্রে জানা যায়, রিপন দপ্তরীর ভবনের নির্মাণ কাজটি দিন- রাত ২৪ ঘন্টাই চলতো। নিরাপত্তা বেষ্টনি ছাড়াই ওই বাড়িতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পাইলিংয়ের কাজ করায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এ বিষয়ে আগেও নির্মাণাধীন ওই বাড়ির মালিক রিপন দপ্তরীকে সর্তক করা হলেও সে এর কোন আমলে নেই নি। এই ভবনটি নির্মানের শুরু থেকে চলাচলের রাস্তাটি তাদের ব্যবহৃত ইট, বালু, সিমেন্ট, রড সহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে বাধা সৃষ্টি করে রেখেছে। ভবনের মালিক বর্তমানে বিত্তশালী হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় মেম্বার ও পঞ্চায়েতের লোকদের হাত করে বিভিন্ন সময়ই প্রভাব বিস্তার করে থাকতো। তাই র্মমান্তিক এ মৃত্যুর পর তার জামাতাকে পাঠিয়ে স্থানীয় মেম্বার, বাড়ির মালিক ও পঞ্চায়েতের লোকদের মধ্যস্থতায় এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানা হুমকী ও ভয় ভীতি দেখানো হয় শিশু রাকিবের পরিবারকে।
জানা গেছে, ওইদিন রাতে অপরাধীদের বাঁচাতে একটি বৈঠক হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন, ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার ও কাশিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমেদ, মহীলা মেম্বার মরীয়ম, পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক রাজু প্রধান, আলাল মাদবর, সেকান্দার মাদবর, জাকির মেম্বার ও স্থানীয় আনোয়ার হোসেন সহ কয়েকজন। এক পর্যায়ে ৫ লাখ টাকার রফাদফা হয়। তবে মামলা না করতে ওই দিন রাতে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হলেও বাকি টাকা পরে দেয়া হবে বলে রেখে দেয় মধ্যস্থকারীরা। পরে রাত ১০ টায় শিশুর দাফন কার্য সম্পন্ন করে তার পরিবার।
নিহত শিশুটির স্বজনদের অভিযোগ, আমার ছেলে খেলা করছিলো তাদের অবহেলার কারণে আমার সন্তানকে হারিয়েছি। ঘটনার সময় মালিক ও শ্রমিকরা ছিলো তারা চাইলে আমার ছেলেকে বাচাঁতে পারতো কিন্তু তা না করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ওইদিন রাতে ছেলেকে দাফন করেছি। এরআগে নির্মাণাধীণ ভবনের মালিকের (রিপন দপ্তরীর) পক্ষ থেকে তারা (স্থানীয় মেম্বার, বাড়ির মালিক ও পঞ্চায়েতের লোকদের মধ্যস্থতায়) আমাদেরকে ৫লক্ষ টাকা দিবে বলেছে। তবে নগদ ৫০ হাজার দিয়েছে। বাকি টাকা পরে দিবে বলেছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, মধ্যস্থতাকারীরা রিপন দপ্তরীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সচেতন মহলের মতে, শহর ও আশপাশে নিরাপত্তা বেস্টনী ছাড়াই নির্মাণ কাজ চলে অহরহ। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। তবে এসব দেখভালোর দায়িত্ব যাদের তারা থাকেন রহস্যজনক নীরব।