নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ তার টিমের মাধ্যমে মানুষের সেবায় নিজে থেকে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন করোনার শুরু থেকে। এখন পর্যন্ত সময়ের সাথে সাথে তার সেবা প্রদানের ধরন পরিবর্তন হলেও সেবা প্রদান থেকে এক বিন্দুও লড়েননি খোরশেদ। নিজে সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত হলেও চালিয়ে গিয়েছেন কার্যক্রম। সুস্থ হয়ে আবারো নতুন উদ্যমে টিম নিয়ে মানুষকে বাঁচাতে সার্বক্ষনিক সেবা দিচ্ছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৩ জুন) সন্ধ্যায় আলাপকালে তার সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন এমন একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হয়। সকলেই খুশি তার সেবায় এবং সকলের একটাই কথা তার এ ঋণ শোধ হবার নয়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন এক ছেলের বাবা জিয়াউদ্দিন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই ছেলেটা হাসপাতালে ভর্তি তার সুস্থতার চিন্তায় দিন রাত পরিবারের সকলের অবস্থা নাজেহাল হয়ে আছে। এমন সময় প্লাজমা খুঁজতে খুঁজতে যখন অস্থির হয়ে পড়ি তখন খোরশেদ ভাইকে জানানোর সাথে সাথে তিনি যত দ্রুত সম্ভব প্লাজমার জোগাড় করে দিলেন। ফেরেশতার মত আভির্ভাব হয়েছেন তিনি। তার ঋণ কোনদিন শোধ হবার নয়।
তিনি জানান, আমার ছেলের জন্য ফেরেশতা হয়ে এসেছেন এই মানুষটি। তাকে জানানোর পর যেমন আমাদের চেয়ে তিনি বেশি পাগল হয়ে দ্রুত প্লাজমা এনে দিলেন। এসময়ে এমন মানুষ সত্যি পাওয়া সত্যি বড় কষ্টকর। আমি দোয়া করি তার জন্য আর সকলের কাছে দোয়া চাই আমার ছেলের জন্য।
একইভাবে প্লাজমা পেয়ে উপকৃত হওয়া আরো ১৯ জনের স্বজনরা নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ। তারা নারায়ণগঞ্জের আলোচিত কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের প্লাজমা সেবার জন্য তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সৃষ্টিকর্তার কাছে তার জন্য দোয়া প্রার্থনা করেছেন।
আজ পর্যন্ত খোরশেদ ৩১জন আক্রান্ত রোগীকে প্লাজমা দিয়েছেন। তার টিমের সদস্যরা করোনা হয়ে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিনামূল্যে প্লাজমা সংগ্রহ করে সেগুলো আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ হতে কাজে লাগান। পুরো কাজটি বিনা খরচে করছেন খোরশেদ। এর মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন আর বাকিরা সুস্থ হয়েছেন এবং চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দেশের প্রথম প্লাজমা সংগ্রহ করার কাজ টিম গঠন করার মাধ্যমে খোরশেদ শুরু করেন জুন মাসের শুরু থেকে। ৯ জুন থেকে তারা প্লাজমা প্রদান শুরু করে। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায়ও প্লাজমা দিয়েছে টিম খোরশেদ। এ ছাড়াও তিনি অক্সিজেন সেবা ও টেলিমেডিসিন সেবাও দিচ্ছেন। তার কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২০ জন অক্সিজেন সাপোর্ট সেবা নিয়েছেন। আর তার টেলি মেডিসিন সেবা কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার মানুষ সেবা গ্রহণ করেছেন।
খোরশেদ জানান, যেহেতু এতে জীবন রক্ষা হচ্ছে তাই আমি এ কাজে দ্রুত হাত দেই এবং আমার টিম নিয়ে কাজ শুরু করি। আজ পর্যন্ত ২৭ জনকে প্লাজমা দিতে পেরেছি আমরা। এর মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়েছেন আবার অনেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আমাদের এই কাজ বিনামূল্যে অব্যাহত থাকবে। কাউকে খুশি করতে নয়, স্রষ্টাকে খুশি করতেই আমাদের সকল কার্যক্রম আমরা অব্যহত রেখেছি। যতদিন নিঃশ্বাস আছে মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ চালিয়ে যাবো।