এ্যাম্বুলেন্স আপনেরা চালান, নাকি আমরা?

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪: খানপুর হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স চালকদের কাছে জিম্মি রোগিরা । ২২ জানুয়ারি সোমবার বেলা পৌনে পাঁচটার ঘটনা। ভাই আমারা গরিব মানুষ, এত্ত ট্যাকা নাইকা আমগো কাছে। দুইটা গাড়ি ভাড়া করার ট্যাকা পামু কই? না থাকলে তো হইব না, ১ গাড়িত ২ জন রোগি নেওয়া যাইব না। রাস্তায় পুলিশ ঝামেলা করব। কথা চলছিলো বস্তায় চাপা পরে গুরুতর আহত শ্রমিকদের সহকর্মী ও দুইজন এ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের মধ্যে।

গুরুতর আহত শ্রমিকের নাম পরিচয় জানা যায়নি। তাদের সহকর্মীরা নিজেদের টাকা একত্রিত করে, ১৮৫০ টাকায় একটি এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে যাবার জন্যে এই প্রস্তুতি। ১টি এ্যাম্বুলেন্সে ২ জন রোগি নেবার যায়গা থাকা সত্ত্বেও তাতে বাঁধা দেন গাড়ির ড্রাইভার। পরে তাদের বাধ্য করা হয় দুইটি এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার জন্য। এই খেটে খাওয়া মানুষদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে এ্যাম্বুলেন্স চালকদের সিন্ডিকেটেরই জয় হল শেষে।

এ সময় সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ কালে পুরো ঘটনা দেখেন। এ্যাম্বুলেন্স চালকদের সিন্ডিকেটের প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর চড়াও হয় ড্রাইভার ও দালালরা। ড্রাইভার ও ক্ষিপ্ত স্বরে বলে, এ্যাম্বুলেন্স আপনেরা চালান, নাকি আমরা? রাস্তায় কত ঝামেলা হয় বুঝেন? এ সময় তাদের গাড়ির ছবি তুলতে গেলে ও ড্রাইভারের নাম জানতে চাইলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। রোগির সাথে আসা সহকর্মীরা বলেন, ‘দেখসেন ভাই? জোর কইরা আমাগো দুইটা এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করাইলো। এরা সেবা দেয় নাকী ব্যবসা করে? হাসপাতালের আরেক কর্মচারী এক ড্রাইভারের নাম জানিয়ে বলেন, অই পাঞ্জাবি পরা ড্রাইভারটার নাম রাজু। অইটা অতিরিক্ত খারাপ। রোগিগো লগে রীতিমতো ডাকাতি করে।

এ সময় কর্তব্যরত পুলিশ সেখানে নীরব ভূমিকা পালন করে। গাড়ি ছেড়ে যাবার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কন্সটেবল সংবাদকর্মীদের বলেন, এরা সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। প্রতিদিনই ইমার্জেন্সি রোগিদের জিম্মি করে এরা ব্যাবসা চালায়। আর ভাড়াও হাঁকে মানুষ বুঝে একেক সময় একেক রকম। তাদের জিজ্ঞেস করা হয় আপনারা নীরব ছিলেন কেনো? উত্তরে বলেন, এটা হাসপাতাল প্রশাসনের উপরের কিছু অসাধু কর্মকর্তার আঁতাতে পরিচালিত হয়। বললেও কিছু হত না।

এ নিয়ে খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতালের স্বাস্থ্য উপ-পরিচালক ডা. আ. মোতালেব মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি ড্রাইভারের নাম জানতে চান। তাকে গাড়ির নাম্বার (ঢাকা মেট্রো ছ-৭১-২৩৭৮) ও ড্রাইভারের নাম জানানো হলে এ ব্যাপারে তিনি ব্যাবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দেন।

বিদ্র: দু’টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটির নেমপ্লেটের রঙ উঠে যাওয়ায় শুধু নাম্বার সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। যার নাম্বার হচ্ছে ৭১-০৫২৫।

add-content

আরও খবর

পঠিত