এমপি সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশীট শুনানি আজ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ : আজ ২৮ই জুন বৃহস্পতিবার আলোচিত শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লাঞ্ছনার ঘটনায় দায়েরকৃত  মামলায় সাংসদ সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে চার্জশীট শুনানি । গতকাল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত।

এরআগে ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আরার আদালত শুনানি  শেষে তাকে ২০ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করে ৪ জুলাই চার্জ শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করেন। এরপর নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালত থেকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) আদালতে মামলাটি স্থানান্তরিত হয়। যার দায়েরকৃত মামলা নং- ১৮৪/১৭।

এ মামলায় মোট ৬৫ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে সংযুক্তি হিসেবে আরো নথিপত্র আছে। তদন্তকালে ২৭ জনের জবানবন্দি নেয়া হয়। বিচারক তদন্ত প্রতিবেদনে ছয়টি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এগুলো হলো- প্রথম: শ্যামল কান্তি ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রিফাত হাসানকে ২০১৬ সালের ৮ মে মারধর করেছেন তা প্রমাণিত। দ্বিতীয় : ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে শ্যামল কান্তির কটূক্তির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তৃতীয় : ২০১৬ সালের ১৩ মে ওই স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে স্থানীয় শামসুল হকের ছেলে অপুর নেতৃত্বে ১০-১২ জন সভাকক্ষে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে অপু ছাড়া বাকি ১০-১২ জনের নাম কোনো সাক্ষীই প্রকাশ করেননি।

চতুর্থ : ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় মসজিদ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন শ্যামল কান্তি। কে বা কারা ওই ঘোষণা দিয়েছেন, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে কমিটির সদস্যদের মধ্যে বিরোধের কারণে এমন ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলে বিশ্বাস করার কারণ আছে। পঞ্চম : ২০১৬ সালের ১৩ মে বিকেল ৫টার দিকে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকে তাকে চারটি থাপ্পড় দিয়েছেন- এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। ষষ্ঠ : সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে শ্যামল কান্তি ভক্ত কান ধরে উঠ-বস করতে বাধ্য হয়েছেন তা ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে- উপস্থিত জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি প্রকাশ পেলে দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান সেদিন ওই শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে তা দেখা যায়। সরকারের মন্ত্রীরাও সে সময় সেলিম ওসমানের ভূমিকার জন্য সমালোচনায় মুখর হন। তবে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের এ সাংসদ কোনো ভুল করেননি দাবি করে ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেন।

add-content

আরও খবর

পঠিত