নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( স্টাফ রিপোর্টর ) : দাবিকৃত দুই লক্ষ টাকা না দেয়ায় ক্ষুদ্র হোসিয়ারী ব্যবসায়ীকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার এএসআই এনায়েত করীমের বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভুক্তভোগী জিকুর পিতা মজিবর রহমান মিথ্যা ও হয়রানিমুলক মামলা প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপারসহ আইজিপি ও স্বারষ্ট্রন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছেন। এ নিয়ে রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
তবে এ অভিযোগের বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এএসআই এনায়েত করীম নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমি কোন টাকা দাবী করিনি। জিকুর পিতার যদি সৎ সাহস থাকে আমার সামনে বলতে বলুন। আমি পুলিশের পোশাক খোলে চলে যাবো। সে একজন আইনজীবী ও বিশেষ পেশার লোক দিয়ে জিকুকে ছাড়াতে তদবির করেছিল। তাদের কথা না রাখায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জিকুর পিতা মজিবর রহমান লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে জানান, তার বড় ছেলে জিকু ৩টি মেশিন নিয়ে একটি ছোট হোসিয়ারী দিয়ে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছে। গত ১২ ডিসেম্বর মাগরিবের নামাজের সময় নারায়ণগঞ্জ সদর থানার এএসআই এনায়েত করিম গিয়ে তার ছেলে জিকু এবং অপারেটর শামীমকে মাদকাসক্তের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে থানায় নিয়ে আসে। তিনি নামাজ শেষে এসে বাসার সামনে লোকজনের ভীড় দেখে এ ঘটনা জানতে পারেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনের সাথে কথা বলে আরো জানতে পারে, ওই সময় তার ছেলের কাছে কিছুই পায়নি, এসে আটক করে নিয়ে যায়। এরপর আমি এএসআই এর সাথে যোগাযোগ করলে টাকা দাবী করে। আর না দিলে ছেলেকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। অনেক বিনয়ে অনুরোধ করেও তার এই অনৈতিক সুবিধা না দিলে আমার ছেলেকে ছাড়বে না সাফ জানিয়ে দেয়।
সাংবাদিকদের কাছে তিনি সহযোগীতা চেয়ে বলেন, আপনারা জাতির বিবেক। আমি আপনাদের সহযোগীতা চাই, কারণ আপনারা ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকমর্তারাই এখন আমার আস্থা। যার জন্য এই বয়সে একজন পিতাকে এভাবে আপনাদের সামনে একটি অসাধু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিচার দাবী করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমি এই মিথ্যা ও হয়রানিমুলক মামলা প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপারসহ আইজিপি ও স্বারষ্ট্রন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, যেখানে আমার ছেলে একটি সিগারেটও খায় না, সেখানে হেরোইনের মতো নেশাদ্রব্য দিয়ে আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়। আমি সন্ধ্যার পর থানায় গেলে আমার নিকট এএসআই এনায়েত দুই লক্ষ টাকা দাবী করে এবং শাসাইয়া বলে টাকা নিয়ে আসেন। আমি অনেক কষ্ট করে স্ত্রীর জিনিস বন্ধক রেখে ৩০ হাজার টাকা পরের দিন শুক্রবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় সুমনের মাধ্যমে এএসআইকে দেই। কিন্তু দাবীকৃত দুই লক্ষ টাকা না দিয়ে ৩০ হাজার টাকা দেয়ায় আমার ছেলে ও শামীমকে ১০০ পুড়িয়া হেরোইন দিয়ে চালান দেয়। যে ছেলে জীবনে মাদক স্পর্শ করে নাই তাকে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে কোর্টে পাঠায়। তাই আমি ও আমার পরিবার আপনাদের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের মাননিয় পুলিশ সুপার ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবী করছি। কারণ বিনাঅপারাধে আজ আমার ছেলে জেলের ভিতর কষ্টে জীবন কাটাচ্ছে। এর জন্য দায়ী নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এএসআই এনায়েত করিম। আপনারাই এটা বের করেন, এই হেরোইন আসলে পেল কোথায়?এসব কতিপয় পুলিশ সরকারের বদনাম করছে। যাদের জন্য ভালো মানুষ অপরাধী হয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী জিকুর মাতা- সুলতানা বেগম, ছোট ভাই জামিল আহমেদ রিকু, চাচা ইসমাইল হোসেন কাজল, ফুফু অন্তরা বেগম, চাচাত ভাই মোক্তার হোসেন পাগলা।