নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( বিশেষ প্রতিবেদক ) : নগরীর বাবুরাইল লেকপাড় ঘেঁষে বেশ কয়েকটি এলাক জুড়ে ছেয়ে গেছে নিম্নমানের হোস পাইপে দেয়া ঝুলন্ত গ্যাস সংযোগ। এতে যেকোন সময়ই অসাবধানতায় ঘটতে পারে প্রাণহানির মত মারাত্মক দুর্ঘটনা। তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেও এখনো পর্যন্ত চোখে পড়ার মত কোন উদ্যোগ গ্রহন করেনি তিতাস কর্তৃপক্ষ। তাদের এমন খাম খেয়ালীপনা কিংবা উদাসিনতায় অনেকেই মন্তব্য করছেন, আবারো লাশ হলেই টনক নড়বে তিতাস কর্তৃপক্ষের।
প্রসঙ্গত, এরআগে তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ইমাম ও মুয়াজ্জিনসহ ৩১ জন মুসল্লির নিহত হওয়ার ঘটনায় তিতাস গ্যাসের সঞ্চালন লাইনে লিকেজ ও দুর্ঘটনার ঝুঁকির কথা নতুন করে সামনে এসেছিল। মসজিদ ট্র্যাজেডির পর দুর্ঘটনার আতঙ্কে পুরো জেলা জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় তিতাসের সঞ্চালন লাইনে অগুনতি লিকেজের কথা মানুষের মুখে মুখে ফিরতে থাকে। এসবের সূত্র ধরে উঠে আসে নারায়ণগঞ্জে তিতাস গ্যাসের বিপুল সংখ্যক অবৈধ সংযোগের বিষয়টিও। ওই মসজিদের ঘটনায়ও লিকেজের অভিযোগও উঠে এসেছিল। তবে সময় মত কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রাণহানির মত ঘটনার রূপ নেয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর মন্ডল পাড়া ব্রীজ থেকে শুরু করে বাবুরাইল, বউ বাজার, ইব্রাহীমের ব্রীজ, বাংলা বাজার, পূর্ব আম বাগান ছাড়িয়ে কাশিপুর ইউনিয়নের সম্রাট সিনেমা হল পর্যন্ত সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য যে খাল নির্মাণ করা হয়েছে, সেটাতে এখন প্লাস্টিকের হোস পাইপে ঝুলন্ত গ্যাস সংযোগ দিয়ে ছেয়ে গেছে। প্রতিনিয়তই এ পথে হাজারো লোকের চলাচল রয়েছে। প্রায় শত শত দালান ও বসত বাড়িতে অর্ধ লক্ষ লোকের বসবাস এখানে। এসব অরক্ষিত গ্যাস সংযোগের সামনে দিয়ে লোকজন আড্ডা দিয়ে থাকে। আশে পাশে চায়ের দোকান থাকায়, কখনো দেখা যায় হাতে সিগারেট নিয়ে দাড়িয়ে আছে। কোথাও কোথাও একটি রাইজার থেকে হোস পাইপের মাধ্যমে নেয়া হয়েছে কয়েকটি গ্যাস সংযোগ। নিম্নমানের এসব পাইপে লিকেজ হলে বড় দুর্ঘটনায় আবারো লাশ দেখবে জেলাবাসী। তাই দ্রæত এর সমাধান না করায় তিতাসকে দায়ী করছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী বলছেন, এ খালের নির্মাণ কাজ শুরু করার সময় থেকে এখন পর্যন্ত গ্যাসের লাইনটি এভাবেই রয়েছে। তবে তিতাস কর্মকর্তারা বলেছিলো যে খালটির দক্ষিন পাশের হাঁটার রাস্তাটি নিচ দিয়ে গ্যাসের লাইন স্থাপন করবে। কবে ঠিক করবে, সেটা তারা জানায় নি। আর এখন তো হাঁটার রাস্তাটি ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু তারা আর সংযোগ দিতে আসে নেই। তাই এমনিতেই চলছে। তবে যেহেতু বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে। তারা ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলেছিল, কোন অদৃশ্য কারণে হয়তো আসেনা টিম। তবে অন্তত নিরাপদে সংযোগ স্থাপন করা হলেই আমরা স্বস্তি পাই। আমরা সকলেই যেহেতু বৈধ সংযোগই ব্যবহার করছি সেক্ষত্রে বিচ্ছিন্ন নয়, ঝুঁকি মুক্ত করা হোক এটাই আমরা সকলেই চাই।
এদিকে, হোস পাইপ দিয়ে যারা সংযোগ নিয়েছে তাদের বৈধ সংযোগসহ বিল পরিশোধ থাকলেও কাজটি ঠিক করেনি। এসব লাইন অবৈধ বলেই গণ্য হবে। কারণ এভাবে সংযোগ নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমরা গ্যাস সংযোগ এমএস পাইপের মাধ্যমে দিয়ে থাকি। তা না হলে নানা দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। আমাদের টিম সেখানে যাবে, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবো। এমনটা ব্যবস্থাপক ও ম্যানেজার বলে থাকলেও ৭ দিনেও কোন বাস্তব পদক্ষেপে রূপ নেয়নি।
তাই আবারো সাধারণ মানুষের প্রাণহানির বিষয়টি মাথায় রেখে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিতাসের ফতুল্লা এলাকার ম্যানেজার আনোয়ারুল আজিম বলেন, আমি তো বলেছিলাম ওই এলাকার টিম যাওয়ার কথা। কেন যায়নি বলতে পারছি না। আমি আবারো ওই এলাকার দায়িত্ব থাকা ম্যানেজারকে বলবো।
তবে নারায়ণগঞ্জ তিতাস অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাকির আহমেদকে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি। তাই এ প্রসঙ্গে তাঁর কোন মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।