হজ যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করলে রেহাই নেই : প্রধানমন্ত্রী

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : হজ যাত্রীদের সঙ্গে কোনো প্রতারণা করলে বা তাদের হয়রানি করলে রেহাই পাওয়া যাবে না বলে এজেন্সিগুলোকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এজেন্সিগুলোকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। ১৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার জাতীয় পর্যায়ের হজ ওমরাহ ব্যবস্থাপনা সম্মেলন২০২২ এবং হজ ওমরাহ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর আয়োজন করে।

গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগদান করে শেখ হাসিনা বলেন, হজ যাত্রীদের সঙ্গে কোনো এজেন্সি প্রতারণা বা হয়রানি করলে সে এজেন্সির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতেও আল্লাহর ঘরের মেহমানদের যারা হয়রানি করবে তাদেরকে কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। এটা মনে রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, হজ ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১ এবং হজ ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২২ প্রণয়ন করেছি। এর ফলে হজ কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম অসদাচরণের অভিযোগের প্রতিকার হয়েছে।

এসময় আগামীতে যারা হজে যাবেন তাদের হজের পাশাপাশি সৌদি আরবের সমস্ত নিয়ম কানুন এবং আইন সম্পর্কে জানা এবং মেনে চলার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা ইসলামের খেদমতের জন্য অনেক কাজ করে গিয়েছেন। আমরা তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে ইসলাম জনগণের উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭০এর সাধারণ নির্বাচনের আগে দেয়া বেতার ভাষণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উদ্ধৃত করেন।

জাতির পিতা বলেছিলেন, আমরা ইনসাফের ইসলামে বিশ্বাসী। আমাদের ইসলাম হযরত নবী করীম (সা.) এর ইসলাম, যে ইসলাম জগতবাসীকে শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় সুবিচারের অমোঘ মন্ত্র।

অতীতে হজ যাত্রীদের নিয়ে কিছু স্বার্থন্বেসী মহল, দালালপ্রতারকদের প্রতারণা, হজযাত্রী পরিবহনে চরম বিশৃঙ্খলা অনিয়মের ঘটনার স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২০০৯ সালে আমাদের সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই হজ ব্যবস্থাপনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিশ্বমানে উন্নতি করতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপেরও উল্লেখ করেন। এরমধ্যে রয়েছেহজ ব্যবস্থাপনা, হজযাত্রীর প্রাকনিবন্ধন, নিবন্ধন, হেলথ প্রোফাইল তৈরি, টিকিট, হজযাত্রী পরিবহন, মক্কামদিনায় আবাসন ব্যবস্থা, চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ সকল ক্ষেত্রে হজ ব্যবস্থাপনা। পাশাপাশি জেদ্দায় পৃথক হজ অফিস স্থাপন এবং সেখানে একজন কাউন্সিলর (হজ) একজন কনসাল জেনারেল (হজ) নিয়োগ।

বক্তব্যে ইসলামকে শান্তির ধর্ম আখ্যা দিয়ে এর মর্মবাণীতে উদ্বুদ্ধ হয়ে সমাজ থেকে অন্ধকার, অশিক্ষা, বিভেদ, সহিংসতা, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ নির্মূলের পাশাপাশি ইসলামের অপব্যাখ্যাকারী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ইসলাম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধর্ম। কিন্তু কিছু সন্ত্রাসীর কারণে এই পবিত্র ধর্ম সমালোচনার সম্মুখীন। আসুন আমরা সবাই ইসলামের বাণীকে হৃদয়ে ধারণ করি এবং সমাজ থেকে অন্ধকার, অশিক্ষা, বিভেদ, সহিংসতা, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ নির্মূল করি। যে অপশক্তি ইসলামের অপব্যাখ্যা করছে তাদের প্রতিহত করুন।

সরকার প্রধান বলেন, দেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত রেখে পবিত্র ইসলামের শান্তিপূর্ণ গৌরব সমুন্নত রাখতে আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ এবং আলেম ওলামাদেরকে সম্পৃক্ত করেছি। মানবসম্পদ উন্নয়নে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করে মসজিদের ইমামগণকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আমরা মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় লাখ লাখ শিশুকে কুরআন শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ৬৪৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া মসজিদভিত্তিক শিশু গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প পুনরায় চালু করি। বর্তমানে প্রকল্পের বরাদ্দ হাজার ২৭২ কোটি লক্ষ টাকায় উন্নীত হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা উপজেলায় হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয় একটি করে মোট ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।

বেসামরিক বিমান পরিবহন পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান, বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আলদাহিলান এবং হাব সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন তসলিমও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

add-content

আরও খবর

পঠিত