ময়না তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ-আত্মহত্যার পূর্বে মানছুরাকে ধর্ষণ

নারায়নগঞ্জ বার্তা ২৪ : নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্ধ নগর গ্রামে গত ৮ ডিসেম্বর ধর্ষণের শিকার হয়ে লজ্জায় ঘৃনায় আতœহননকারী স্কুল ছাত্রী মানছুরার ময়না তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় মানছুরার ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়েছে বন্দর থানা পুলিশ। রির্পোটে উল্লেখ করা হয়েছে আতœহত্যার পূর্বে মানছুরা একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষনকারীসহ গ্রাম্য মাতবরদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে মানছুরার পিতা জাকির হোসেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুক জানান, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা মুছাপুর ইউনিয়নের লাঙ্গলবন্দ নগর এলাকায় জাকির হোসেনের চতুর্থ শ্রেণীর স্কুল পড়–য়া মেয়ে মানছুরা (১১) নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশ আত্মহত্যার খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে।
নিহত স্কুল ছাত্রী মানসুরার ময়না তদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৯(ক) দ্বারায় মামলা নেয়া হয়েছে। মানছুরার পিতা জাকির হোসেন জানান, গত ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মানছুরা নিজ বাড়ির গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। এক ঘন্টা পরও মানছুরা ঘরে না আসায় তাকে খুঁজতে বের হয়ে ডাকাডাকি করতে থাকে তার মা। এ সময় বাড়ির পাশে মনার বাগানে মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে এগিয়ে যান তিনি। এ সময় একই এলাকার গার্মেন্ট শ্রমিক হাবিবুর রহমান হাবিব তার সামনে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তারপর মানছুরাকে মনার বাগান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়িতে নিয়ে আসার পর মানছুরা তার মাকে জানিয়েছে হাবিব তাকে গেইটের সামনে থেকে তুলে মনার বাগানে নিয়ে একাধিকবার জোর পূর্বক ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনাটি প্রথমে আলী আকবর নামের এক মাতবরকে জানিয়েছে। ওই মাতবর বিষয়টি থানা পুলিশের কাছ থেকে বিরত থাকতে বলে বিচার সালিশের আশ্বাস দেয় পিতা জাকিরকে। এর  পরের দিন মাতবর আলী আকবর ধর্ষণকারী হাবিবের বাড়িতে মেয়েকে পাঠিয়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়। তার পরামর্শে মেয়েকে হাবিবের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় জাকির হোসেন। পাঠিয়ে দেয়ার পর ওই দিন রাতেই মাতবর আলী আকবর অপর মাতবর সামসু তার মেয়েকে তার বাড়িতে ফেরত নিয়ে এসে বিচার সালিশের আশ্বাস দেয়। বিচার সালিশের কথা শুনে মানছুরা লজ্জা ঘৃনায় আত্মহত্যা করে। স্থানীয় মাতবরদের নাটকীয় ভুমিকার জন্য তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি তার মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, গ্রাম্য মাতবরদের কারনে যেন আর কারো মেয়ের এমন পরিনতি না হয়।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম নারায়নগঞ্জ বার্তা ২৪ কে জানায়, স্কুল ছাত্রী মানছুরার ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। আত্মহত্যার আগে সে ধর্ষনের শিকার হয়েছে। ধর্ষনকারী হাবিবুর রহমানসহ জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং অভিযুক্ত আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

add-content

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর

পঠিত