বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এখন সবচেয়ে ভালো : দিল্লিতে শেখ হাসিনা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ (ডেস্ক রিপোর্ট) : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সামনে রেখে বলেছেন, বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক এখন সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে। আপনাদের জন্য সঠিক পরিবেশটি নিশ্চিত করতে দুই দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আপনাদের জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি, আর আপনাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিতে আমরাও প্রস্তুত। আপনাদের সবাইকে আমি আহ্বান জানাব, এই প্ল্যাটফর্মকে পুরোপুরি কাজে লাগান এবং আমাদের দুই দেশের মানুষের বৃহত্তর মঙ্গলের স্বার্থে অর্থনীতিতে অবদান রাখুন।

তিনি বলেন, আমরা চাই বিনিয়োগ আর ব্যবসাটা এক সঙ্গে হোক, যেখানে ভারতের বড় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে কারখানা খুলে পণ্য উৎপাদন করবে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সুযোগটা কাজে লাগিয়ে তারা সেই পণ্য ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর পাশাপাশি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বিক্রি করতে পারবে চার দিনের ভারত সফরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (৪ অক্টোবর) নয়া দিল্লির আইটিসি মৌর্য হোটেলে বাংলাদেশভারত বিজনেস ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাণিজ্য বিনিয়োগের বড় একটি অংশ প্রতিবেশী দেশুগুলোর সঙ্গেই হয় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, একইভাবে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন এবং আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে সেই সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি, যার স্বপ্ন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন। আর এভাবেই আমাদের শহীদ আর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মানটা আমরা দেখাতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বিগত বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে কিন্তু এর পাল্লা এখনও ভারতের দিকে অনেক বেশি ঝুঁকে আছে ২০১৮ সালে দুই দেশের মধ্যে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে। এর মধ্যে ভারতের . বিলিয়ন ডলারের পণ্য এসেছে বাংলাদেশে এই হিসাবে বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে ভারতীয় রপ্তানি বাণিজ্যের অষ্টম বৃহত্তম গন্তব্য। ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির পরিমাণ গতবছর প্রথমবারের মত বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নতিটা স্পষ্ট। কিন্তু আমাদের এই সুসম্পর্ককে বাণিজ্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃত করার অনেক সুযোগ আমাদের সামনে রয়েছে।দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বিনিয়োগ নীতিই সবচেয়ে উদার। বাংলাদেশে আইন করে বিদেশি বিনিয়োগের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া কর অবকাশ সুবিধা, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক ছাড়, লভ্যাংশ পুঁজির সহজে স্থানান্তরের মত অনেক সুযোগসুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ

বিদেশি বিনিয়োগের সুবিধার জন্য বাংলাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১২টি অঞ্চলে ইতোমধ্য কাজ শুরু হয়েছে। মোংলা, ভেড়ামারা মিরসরাইয়ের তিনটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে কেবল ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য বেশ কয়েকটি হাই টেক পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে সরকার গঠনের পর থেকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে আঞ্চলিক বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠার ভালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের সামনে। পশ্চিমে ভারত, উত্তরে চনি, পূর্বে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলো নিয়ে প্রায় ৪০০ কোটি মানুষের বিশাল এক বাজারের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে বাংলাদেশ। ১৬ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দেশ তরুণ কর্মীবাহিনীর সংখ্যাধিক্য, তুলনামূলক সস্তা শ্রম, বিদ্যুৎ সুবিধা কাজে লাগিয়ে দ্রুত নগরায়ন এবং মধ্যবিত্তের ক্রমক্ষমতা বৃদ্ধির তথ্য অনুষ্ঠানে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিষয়গুলো বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথাই বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরে।

অন্যদের মধ্যে ভারতের শিল্প রেলপথ মন্ত্রী পিযূস গয়াল, বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, অ্যসোসিয়েটেড চেম্বারস অব কমার্স অব ইনডিয়ার (অ্যাসোচাম) সভাপতি বালকৃষাণ গোয়েঙ্কাসহ দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন

add-content

আরও খবর

পঠিত