বহিরাগত প্রবেশে নারায়ণগঞ্জে নিষেধাজ্ঞা, কেন্দ্রের সিসিটিভি বন্ধ

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( নিজস্ব প্রতিবেদক ) : রাত পোহালেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ভোট। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে বইছে উৎসবের আমেজ। তবে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটির ভোটে আইনশৃঙ্খলা প্রশ্নে কোনো ছাড় দেবে না প্রশাসন। কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হলে, প্রার্থী যেই হোন- দেয়া হয়েছে কঠোর হাতে দমনের হুঁশিয়ারি। মাঠে রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ হাজার সদস্য। এছাড়া ভোটের দিন নগরীতে বহিরাগতের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। সবাইকে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সংঘাতের রেশের মধ্যেই ভোট হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটিতে। সারা দেশের চোখ এখন এই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দিকে। তাই এখানকার ভোটারদের নিরাপত্তা নিয়ে থাকা উদ্বেগ কাটাতে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী।

এরই মধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে ইভিএমসহ নির্বাচনি সরঞ্জাম। এদিকে, তৈমূর আলমের অভিযোগের জবাবে রিটার্নিং অফিসার জানান, ভোটারদের গোপনীয়তার স্বার্থে কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বন্ধ থাকবে।

১৫ই জানুয়ারি শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সিটি নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মো.মোস্তাইন বিল্লাহ্ বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার গ্রেফতার ও হয়রানির বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক কোনো অভিযোগ দেননি।

এ সময় মো.মোস্তাইন বিল্লাহ্ বলেন, যারা নির্বাচন বানচাল করতে পারে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে, দাগি আসামি—তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে তা করছে পুলিশ। ইতিমধ্যে সিটি এলাকার ২৭টি ওয়ার্ডের সব কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছানো হয়েছে। ভোটের নিরাপত্তায় ৩৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের ৭৫ ও র‌্যাবের ৬৫টি টিম মাঠে থাকবে। ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে।

এছাড়া আরো ৬ প্লাটুন বিজিবি চাওয়া হয়েছে। তারা ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তিনি ভোটারদের নিবিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন ৭ জন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ ভোটারের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৬ জন। নারী ভোটার ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১১ জন। ভোটের দায়িত্বে থাকছেন ৪ হাজারের বেশি কর্মকর্তা।

এরই মধ্যে ১৯২ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ইভিএমসহ ভোটের সরঞ্জাম হস্তান্তর করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পাঁচ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

এ সিটিতে এবার সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেজন্য অতিরিক্ত মেশিনও রাখা হবে। ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোট কেন্দ্র করা হয়েছে এবং যেসব প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে সেগুলো ভোটের দিন বন্ধ রাখতে গত মঙ্গলবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর। সে সময় প্রার্থীরা প্রচারের জন্য সময় পেয়েছিলেন ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ১৬ দিন। এবার ভোটগ্রহণ হবে ১৬ই জানুয়ারি। প্রচার শুরু হয়েছে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর, আর শেষ হবে এ বছরের ১৪ই জানুয়ারি রাত ১২টায়। অর্থাৎ এবার প্রার্থীরা প্রচারের জন্য সময় পেয়েছেন ১৮ দিন।

এরআগে গত ৩০ই নভেম্বর এই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এবার হচ্ছে তৃতীয় নির্বাচন। প্রথমবার ৯টি ওয়ার্ডে ইভিএমে, বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হয়। ২০১৬ সালে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে ভোট হয়। এবার ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে। প্রথমবার নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হয় এ সিটিতে। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন চালুর পর এটি দ্বিতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

add-content

আরও খবর

পঠিত