প্রেমের টানে বাংলাদেশে মালয়েশিয়ান তরুণী

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : প্রেমের টানে ভাষা-সংস্কৃতি, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে সাত সমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দিয়ে ছুটে আসা নতুন কোনো ঘটনা নয়। বিশ্বজুড়ে প্রতিদিনই ঘটছে এমন ঘটনা। এবার এমন এক ঘটনার সাক্ষী হলো রাজশাহীবাসী। প্রেমের টানে এবার রাজশাহী এসেছেন ২০ বছর বয়সী মালয়েশিয়ান তরুণী স্যান্ডি। মন দেওয়া-নেওয়ার পর ঘর বেঁধেছেন রাজশাহী মহানগরীর বিনোদপুর এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে জুলফিকার আলীর সঙ্গে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, জুলফিকার প্রায় ৮ বছর আগে পড়াশোনার জন্য মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন একটি চাকরিও করতেন। ওই সময় জুলফিকারের সঙ্গে পরিচয় হয় স্যান্ডির। এই পরিচয় একসময় রূপ নেয় ভালোবাসায়। এরপর ২ জনের সম্পর্ক আরও গভীরতা পায়। শেষ পর্যন্ত ভালোবাসার টানে বাবা-মাকে ছেড়ে রাজশাহীতে উড়ে আসেন স্যান্ডি।

এখানে এসে জুলফিকারের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন স্যান্ডি। তার পরিবারও স্যান্ডিকে আনন্দ উৎসবের মাধ্যমেই বরণ করে নেন। ঈদের পর গত ১৪ জুলাই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এই বিয়েতে খুশি জুলফিকারের পরিবার, স্বজন, বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

বিয়ের পর জুলফিকার বলেন, এই বিয়ে নিয়ে আমার ভাই-বোন, মা, আত্মীয়-স্বজন সবাই খুব খুশি। স্যান্ডি আবারও প্রমাণ করলো সত্যিকারের ভালোবাসা কোনো বাধা, ধর্ম ও ভাষা মানে না। স্যান্ডি খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী ছিল। সে ধর্মান্তরিত হয়েছে আমার জন্য, তার পরিবার ছেড়েছে। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তার নাম রাখা হয়েছে আলিশা অ্যানি। বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছে। তার এই ভালোবাসা অবশ্যই আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি।

জানতে চাইলে মালয়েশিয়ান এই তরুণী বলেন, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ। আগামী সপ্তাহেই জুলফিকারকে নিয়ে মালয়েশিয়ায় ফিরতে চাই। সেখানে ২ জনই নতুনভাবে নিজ ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাব।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আলিশা অ্যানি মালয়েশিয়ার একজন পাসপোর্ট কর্মকর্তা এবং জুলফিকার রাজশাহীতে ব্যবসা করেন। বাংলাদেশ এবং রাজশাহী আলিশার ভীষণ ভালো লেগেছে। শাশুড়ি তাকে পছন্দ করায় এবং পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় তিনি অনেক আনন্দিত। শাশুড়ির সঙ্গে সংসারের কাজ করতে চান। কিন্তু তার শাশুড়ি ভালোবেসে কিছুই করতে দেন না বলেও জানান মালয়েশিয়ান নববধূ।

এদিকে, ভিনদেশি এই নববধূকে দেখতে এখন জুলফিকারে বাড়িতে ভিড় করছে এলাকাবাসী। ভাষাগত সমস্যা থাকলেও জুলফিকারের মা, ভাই, বোনদের সঙ্গে এরই মধ্যে বেশ সখ্যতা গড়ে তুলেছেন আলিশা। তবে তার সঙ্গে সবার কথোপকথনে দোভাষীর কাজ করছেন জুলফিকার।

add-content

আরও খবর

পঠিত