না.গঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ নৌ পথে সি-ট্রাক, খুশি যাত্রীরা

নারায়ণগঞ্জ বার্তা ২৪ ( ডেস্ক রিপোর্টার ) : নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর চর সৈয়দপুর আল আমিন নগর এলাকায় কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চ ডুবির ঘটনার দিন বিরতির পর যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে লঞ্চের পরিবর্তে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নারায়ণগঞ্জ টু মুন্সিগঞ্জ নৌ পথে চালু করলো সিট্রাক। ২৪শে মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটা থেকে নারায়ণগঞ্জ সেন্ট্রাল লঞ্চ টার্মিনাল থেকে এসটি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত নামে সি ট্রাকটি প্রথমবারের মতো মুন্সীগঞ্জে যাত্রা করে আবার বিকালে ফিরে আসে। প্রথম যাত্রায় সি ট্রাকের যাত্রী ছিলেন ৩০ জন।

সি ট্রাকের ক্যাপ্টেন (চালক ইনচার্জ) নুর হোসেন সুমন বলেন, এই সি ট্রাকে যাত্রী ধারণক্ষমতা ২০০ জন। প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে মুন্সিগঞ্জ যাওয়া যাবে। যাত্রী প্রতি ভাড়া পড়বে ৪০ টাকা করে। এটা সমুদ্রে চলাচলের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। ফলে অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় এই সি ট্রাকের ঝুঁকি অনেক কম। যাত্রীরা নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, বিআইডব্লিউটিসির নির্দেশে পথে সি ট্রাক চলাচল শুরু হয়েছে। এই সি ট্রাকে দুটি ইঞ্জিন রয়েছে। এটা পরিচালনায় জন কর্মকর্তা রয়েছেন।

এদিকে, সিট্রাক চালু করায় রীতিমতো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে এই রুটে চলাচলকারী লঞ্চ মালিকদের। সি ট্রাক চালু করায় সাধারণ যাত্রীরা খুশি হলেও লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা নিয়ে চরম সমালোচনা শুরু করেছেন। যাত্রীবাহী ঐসব ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছেন এমন ইস্যুতে আন্দোলনে নামতে পারেন লঞ্চ মালিকরা এমনটাও শোনা যাচ্ছে লঞ্চ টার্মিনালে।

অপরদিকে দিন বিরতির পর যাতায়াতের মাধ্যম খুঁজে পাওয়ায় বেশ আনন্দিত এই রুটের শত শত যাত্রী। তারা বলছেন, এই সার্ভিস চালুর বিষয়টি অনেকেই জানেন না বলে আজ যাত্রী সংখ্যা কম। ভাড়া ৪০ টাকা হলেও সবচেয়ে বড় ইস্যুটি হলো নিরাপত্তা সেবার। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এই রুটের ছোট ছোট লঞ্চগুলোতে জীবন হাতে নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যুগের পর যুগ।

বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল বলেন, নৌ পথে চলাচলকারী লঞ্চগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। যেজন্য সি ট্রাক চালু করা। সি ট্রাক লঞ্চগুলোর তুলনায় নিরাপদ। আজ মুন্সিগঞ্জ নৌ পথে চলাচল শুরু হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে অন্য সবগুলো নৌপথে সি ট্রাক চলাচল শুরু হবে। আশা করছি লঞ্চ মালিকরাও এবার বড় লঞ্চ চালু করবেন।

তবে ভিন্ন কথাও বললেন বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতি নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি বদিউজ্জামান। তার ধারণা, এই সি ট্রাক এক সপ্তাহের বেশি চলবে না। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এর যাত্রী ধারণক্ষমতা ২০০ জন। এজন্য এক থেকে দেড় ঘণ্টা বসে থাকতে হবে যাত্রী ফুল হওয়ার জন্য। কিন্তু আমরা যখন লঞ্চ চালিয়েছি তখন ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী নিয়ে আধাঘণ্টা পরপর ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে গেছে। অন্যথায় যাত্রীরা বিকল্প পথে চলে গেছে। ফলে যাত্রীরা এক দেড়ঘণ্টা বসে থাকবে না।

উল্লেখ্য, গত ২০শে মার্চ রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার আল আমিন নগর সৈয়দপুরের মাঝামাঝি কয়লাঘাট এলাকায় নির্মিতব্য নাসিম ওসমান ব্রিজের কাছে কার্গো জাহাজ এমভি রূপসী এর ধাক্কায় নারায়ণগঞ্জ টু মুন্সীগঞ্জগামী এম এল আফসার উদ্দিন নামে যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে যায়। ঘটনায় শিশু, নারীসহ ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা। সেই রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নারায়ণগঞ্জ টু মুন্সিগঞ্জ রুটে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এরপর ঘটনার পরদিন থেকে নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি নৌপথে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকে। এ ঘোষণায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।

add-content

আরও খবর

পঠিত